গাজায় বেশির ভাগ হাসপাতাল বন্ধের পথে

একদিকে ইসরায়েলি বোমা হামলা, অন্যদিকে বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও পানির সঙ্কটে অচল হয়ে পড়েছে গাজার বেশির ভাগ হাসপাতাল। যেগুলো এখনো আংশিক চালু রয়েছে, সেগুলো যখন-তখন বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। সর্বশেষ গাজার প্রধান হাসপাতাল আল-শিফায় বোমা হামলায় পরিষেবা বন্ধের পথে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালটিতে থাকা বেশ কয়েকটি নবজাতককে সরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।

গাজার আল-কুদস হাসপাতালও বিদ্যুৎ সঙ্কটে বন্ধ হওয়ার পথে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, গাজায় মোট ৩৬ টি হাসপাতালের মধ্যে বেশি অর্ধেক আর কার্যকর নেই। সেখানে কোনো চিকিৎসা সেবা চলছে না। কোনো কোনোটি বোমা হামলায় একেবারেই ধ্বংস হয়ে গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজার বৃহত্তম হাসপাতালে আল-শিফায় বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।

একজন কর্মকর্তা জানান, বোমার আঘাতে হাসপাতালের কার্ডিয়াক ওয়ার্ডটি ধ্বংস হয়ে গেছে।

তবে ইসরায়েল বারবার হাসপাতালটিতে বোমা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করলেও ওই অঞ্চলে হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের কথা স্বীকার করেছে।

হাসপাতালের একজন সার্জন জানিয়েছেন, শুধু বোমা হামলাই নয়, জ্বালানির অভাবের আল-শিফা হাসপাতাল পরিষেবার বাইরে চলে গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেন, জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় হাসপাতালের বেশির ভাগ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ইনকিউবেটরে রাখা দুই শিশু শনিবার মারা গেছে এবং আরও ২৭ নবজাতক ধুঁকছে।

টেলিফোনে কিদরা আরও বলেন, আমরা স্টাফরাও আল শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে আছি। ইসরায়েলি বাহিনী বেশির ভাগ ভবনকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ইন্টারনেট ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ায় হাসপাতালটির সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেখানে স্টাফ ও রোগীদের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

গাজার অন্যান্য বড় হাসপাতালের মধ্যে আল-কুদস হাসপাতাল, ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল ও আল-নাসর হাসপাতালও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে, আল-কুদস হাসপাতালের জ্বালানি শেষ হয়ে গেছে। মেডিকেল কর্মীরা বিদ্যুৎ ছাড়াই রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আগের দিন হাসপাতালটি ঘিরে ছিল ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক।

ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের কোনো বিদ্যুৎ বা অক্সিজেনের মজুত নেই। চিকিৎসা সেবা দুয়েকদিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে।