গাজায় অজ্ঞাত মরদেহ: পৃথিবীতে যাদের পরিচয় জানা যায়নি

ইসরায়েলে হামাসের হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে গাজা উপত্যকা। এ হামলায় বিপুল সংখ্যক বেসামরিক লোকজন নিহত হলেও তা নিয়ে মাথা ঘামায়নি নেতানিয়াহুর প্রশাসন। অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছে যে, হামলায় নিহত হলে যেন অজ্ঞাত পরিচয় নিয়ে কবরে যেতে না হয়, সে জন্য গায়ে নাম লিখে রেখেছেন অনেকে। তারপরও নিহত অনেক ফিলিস্তিনিকে দাফন করা হচ্ছে অজ্ঞাত হিসেবেই। দাফন-কাফনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই পৃথিবীতে তাদের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। তবে জান্নাতে অবশ্যই তারা সবার পরিচিতই থাকবেন। খবর আল জাজিরা।

গাজায় দাফনের জন্য প্রস্তুত একটি গণকবর

গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। যাদের সিংহভাগই বেসামরিক নাগরিক। আবার নিহতদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। এক মাসে এত বেশি মানুষের দাফনের সক্ষমতা নেই গাজা উপত্যকার মতো ছোট্ট ভূখণ্ড ও এর মানুষদের। তাই মরদেহ যেমন কবরস্থানের পর বাগান-মাঠে দাফন করা হয়েছে, তেমনি একসঙ্গে দাফন করা হয়েছে অনেককে।

আবার নিহত সবার পরিচয় বের করাও সম্ভব হয়নি। ফলে তাদের অজ্ঞাত হিসেবেই দাফন করা হয়েছে। সাধারণত প্রচণ্ড হামলায় মরদেহের মারাত্মক বিকৃতি বা পরিবারের সব সদস্য নিহত হয়েছে- এমন ক্ষেত্রেই পরিচয় শনাক্ত নিয়ে জটিলতায় পড়তে হয়েছে।

ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা

গাজার উপত্যকার একটি হাসপাতালে মর্গে দায়িত্ব পালন করা এক ব্যক্তি বলেন, অনেক মরদেহে কোনো চিহ্ন না থাকায় এর পরিচয় জানা যায়নি। তারপরও পরিচয় জানার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তা সংরক্ষণ করা হয়েছে। পরে মরদেহের বিশেষ কোনো চিহ্ন বা কাপড়ের অংশ বা এগুলোর ছবি তুলে রেখে মরদেহ দাফন করা হয়েছে। আর এসব চিহ্ন বা ছবিগুলো সংরক্ষণ করা হচ্ছে, যেন ভবিষ্যতে কেউ খোঁজ করতে এলে সহজেই স্বজনদের মরদেহের খোঁজ বের করতে পারেন।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের প্রধান সালামা মারুফ বলেন, ইসরায়েলি হামলায় নিহত অনেক মরদেহের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। আবার জায়গার অভাবে গণকবরে দাফন করতে বাধ্য হয়েছি। এই পৃথিবীতে হয়ত তাদের পরিচয় জানা যায়নি। তবে আমরা নিশ্চিত জান্নাতে তারা সবার কাছে পরিচিত হবেন।