গাজা: অ্যানেস্থেশিয়া ছাড়াই করতে হচ্ছে অপারেশন

এক মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় চলছে অবিরাম হামলা। বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র ও স্থল হামলায় প্রতিনিয়ত হতাহত হচ্ছেন শত শত মানুষ। এ সব ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে আনা হলেও সেখানে তাদের চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা একেবারেই সীমিত হয়ে এসেছে। কোথাও কোথাও হাসপাতাল বন্ধই হয়ে গেছে। কোথাও আবার আহত ব্যক্তিদের ছোট সেলাই থেকে শুরু করে বড় অস্ত্রোপচার সবই করা হচ্ছে অ্যানেস্থেশিয়া ছাড়াই। খবর রয়টার্স।

গাজার একটি হাসপাতাল

খবরে বলা হয়, গাজার হাসপাতালগুলোর অবস্থা দিন দিন করুণ হচ্ছে। এসব হাসপাতালে এখন অতি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামগুলোও শেষ হয়ে এসেছে। ফলে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কখনো কাটাছেড়া বা অপারেশনের মতো রোগীর ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ব্যথানাশক ছাড়াই চিকিৎসা করতে বাধ্য হচ্ছে চিকিৎসকরা। এ অবস্থায় অনেকে অপারেশনের সময় কোরআন তেলাওয়াত করে সেই ব্যথা সহ্য করার চেষ্টা করছেন।

গত বুধবার (৮ নভেম্বর) আবু তাহির নামের এক ব্যক্তিকে আল-শিফা হাসপাতালে আনা হয় তার ক্ষতের ড্রেসিং করাতে। কয়েকদিন আগে তিনি বিমান হামলায় আহত হয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় তার অপারেশনের দরকার হলেও হাসপাতালে অ্যানেস্থেশিয়া করার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ফলে চিকিৎসকরা তার অপারেশন করেছিলেন কোনো ধরনের ব্যথানাশক ছাড়াই। আবু তাহির বলেন, যতক্ষণ আমার ক্ষতে সেলাই করা হচ্ছিল, পুরোটা সময় আমি কোরআন তেলাওয়াত করেছি।

ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলো এমন সব ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। আবু ইমাদ হাসনাইন নামের এক নার্স বলেন, বোমা হামলায় আহত হওয়া একটি শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার জন্যও অ্যানেস্থেশিয়ার কোনো ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু তাকে বাঁচাতে যখন ব্যথানাশক ছাড়াই মাথায় সেলাই করা শুরু হয়, তখন সে ‘মা মা’ বলে চিৎকার করতে শুরু করে। গোলাপি জামা পরা ওই শিশুটির কথা এখনও ভুলতে পারছেন না আবু ইমাদ।

তিনি বলেন, আমরা অনেক সময় বাধ্য হয় রোগীদের মুখে ব্যান্ডেজ রাখি, যাতে ব্যথা সহ্য করতে গিয়ে কামড়ে ধরার সময় আবার আহত না হয়ে যায়। আমরা জানি, এ সময় তারা যে কষ্ট সহ্য করে সেটি বর্ণনাতীত। কিন্তু আমাদের কাছে করার যে কিছুই নেই।