আফগান হাজারাদের বহিষ্কার ‘কবরে সমাধিস্থ করার সমতুল্য'

সাদিক, আফগানি হাজারা আদিবাসী। তালেবান শাসকদের অত্যাচারে আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে গত বছর পাকিস্তানে এসেছিলেন। ২৫ বছর বয়সি সাদিক এখন পাকিস্তান থেকে বহিষ্কারের মুখোমুখি এবং তিনি আশঙ্কা করছেন তার দেশ আফগানিস্তানে ফিরলে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।

পাকিস্তান থেকে আফগানদের নির্বাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

তিনি বলেন, কাবুলে যাওয়া মানে দাফনের জন্য কবরস্থানে যাওয়ার মতো। তালেবানরা কাবুলে তার বাড়িতে হামলা করেছিল এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অবস্থান খুঁজে বের করার জন্য তাকে অপহরণ করেছিল। তিনি আরও বলেন, আমি ভয় পাই তারা আমাকে মেরে ফেলবে... পালিয়ে যাওয়ার জন্য। আমার দিকে তাদের নজর আছে।

সাদিক তার পরিবারের সাথে করাচিতে বসবাস করেন এখন। আফগানিস্তানে কোন ভবিষ্যত দেখতে পাচ্ছেন না বলে তিনি চলে যাওয়ার কোন প্রস্তুতি নেননি।

অনেক আফগান তাদের জন্মভূমিতে ফিরে যেতে ভয় পাচ্ছে। সেখানে মানবাধিকার ভেঙ্গে পড়েছে। আর সাদিকের মতো হাজারাদের জন্য ঝুঁকি আরো বেশি। প্রধানত শিয়া সম্প্রদায় কট্টরপন্থী তালেবানদের দ্বারা কয়েক দশক ধরে নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছে।

আমির নামে কাবুলের এক হাজারা বলেন, আফগানিস্তানে হাজারাদের গণহত্যা এখনও চলছে। তালেবানরা বিভিন্ন অজুহাতে আফগানিস্তানের হাজারা এলাকাগুলো দখল করার চেষ্টা করছে।

২৮ বছর বয়সী আমির তালেবানদের ক্রমাগত নির্যাতনে সংগীতশিল্পী হিসেবে তার স্বপ্নের চাকরি ছেড়ে দিয়ে এখন একটি ছোট কোম্পানিতে মার্কেটার হিসেবে কাজ করে। তিনি বলেন, কোন হাজারা এখানে নিরাপদ নয় এবং আফগানিস্তানে ফিরে আসা অধিকাংশ হাজারাকে হত্যা করা হবে না এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। জীবন নরকের মতো।

বৈধ ভিসা বা সঠিক পরিচয়পত্র ছাড়া হাজারা পরিবারগুলো রাডারের আওতায় থাকতে বাধ্য হচ্ছে। তারা বলছেন, প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা ঘোষণার পর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বা ঘুষ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। অন্যরা রাতারাতি তাদের চাকরি হারিয়েছে।

যদিও পাকিস্তান জোর দিয়ে বলছে, নির্বাসন প্রক্রিয়াটি সুশৃঙ্খল এবং পর্যায়ক্রমে পরিচালিত হবে। সম্ভবত অপরাধমূলক রেকর্ডযুক্ত ব্যক্তিদের দিয়ে শুরু করা হবে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের হেদার বার বলেছেন, পরিকল্পনাটি সবার জন্যই শঙ্কাজনক, শুধু হাজারার জন্য নয়।