দিল্লিতে বায়ু দূষণ চরমে, সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা 

চরম মাত্রায় বায়ু দূষণের কারণে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় দুই দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে দিল্লি। শহরের বাতাসের মান চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো মারাত্মক পর্যায়ে নেমে গেছে।আগামী দুই সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা পরিবেশবিদদের। খবর বিবিসি ও এনডিটিভির।

দিল্লি শহরে বায়ু দূষণের মাত্রা চরমপর্যায়ে পৌঁছেছে

বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহর ভারতের রাজধানী দিল্লি। উৎসবের সময় উপর্যুপরি আতশবাজি পোড়ানো বা পটকা ফাটানো, যানবাহনের ধোঁয়া, কৃষকদের ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো, বাতাসের কম গতিসহ বিভিন্ন কারণে শীতকালে দিল্লির বাতাস বিষাক্ত হয়ে ওঠে।

দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটির সমীক্ষায় দেখা গেছে, দিল্লির প্রতিবেশী রাজ্য পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় কৃষি জমিতে ফসলের অবশিষ্টাংশ বিশেষ করে খড়কুটো পোড়ানোর ঘটনা নভেম্বরে এসে বেড়ে যায়। এতে ওই অঞ্চলসহ দিল্লি শহরে ১-১৫ নভেম্বর সময়ে বায়ু দূষণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে।

দিল্লি রাজ্য সরকারের অভিযোগ, প্রতিবেশি হরিয়ানা ও পাঞ্জাব রাজ্যের কারণেই দিল্লির বাতাস এত বেশি দূষণের শিকার হচ্ছে।

পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ঘোষণা করেছেন, শহরের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শুক্রবার-শনিবার দুইদিন বন্ধ থাকবে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেখা গেছে, দিল্লি শহর ও শহরতলীর বাতাসে পিএম ২.৫ এর ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে নিরাপদ সীমা ৬০ মাইক্রোগ্রামের চেয়ে অন্তত সাত-আটগুন বেশি।

বাতাসে থাকা এই পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) অর্থাৎ সূক্ষ্ম ধূলি ও জলকণার মিশ্রণ ফুসফুসে প্রবেশ করে নানা রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সম্প্রতি হাসপাতালগুলোতে হাঁপানি ও ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে আসা শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।

দিল্লির সফদারজং হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান যুগল কিশোর বলেন, ইদানিং ব্রঙ্কাইটিস সংক্রমণের শিকার রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। আগের তুলনায় আমরা এ রোগে আক্রান্ত বেশি রোগী পাচ্ছি।

শ্বাসকষ্টে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের একেবারে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।

দিল্লিতে বাতাসের এমন দূষণ রোধে সম্প্রতি দিল্লি মেট্রো ও বৈদ্যুতিক বাস পরিষেবাসহ সমস্ত গণপরিবহণে কালো ধোঁয়া নির্গমন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এছাড়া গত প্রায় তিন বছর ধরেই শহরের মধ্যে পটকা তৈরি, বিক্রি ও ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে দিল্লি কর্তৃপক্ষ। তাতেও বাগে আনা যাচ্ছে না বাতাসের দূষণ।