গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতার বিরুদ্ধে সরব লাতিন আমেরিকা

অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নৃশংস হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে সরব লাতিন আমেরিকার দেশগুলো। ইসরায়েলের এমন আগ্রাসনের প্রতিবাদে এরইমধ্যে তেলআবিব থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করেছে তিন দেশ কলম্বিয়া, চিলি ও বলিভিয়া। গাজায় ‘ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে’ অভিযোগ তুলে এখনই যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানিয়েছে ব্রাজিল, চিলি, আর্জেন্টিনা, পেরু ও মেক্সিকো। খবর আল জাজিরার।

গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড’ বলছে কলম্বিয়া

কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো গাজায় ইসরায়েলের অনবরত বোমাবর্ষণের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটি পুরোপুরি 'গণহত্যা'। গাজা থেকে ফিলিস্তিনি জনগণকে সরিয়ে তা দখল করতে চায় ইসরায়েল।

বুধবার এক্স-এর একটি পোস্টে পেট্রো গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহতদের একটি ছবি পোস্ট করেন। ওই শরণার্থী ক্যাম্পে একদিনে ১৯৫ জন নিহত এবং আরও ১২০ ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলি বোমায় গত ২৭ দিনে ৯ হাজার ৬১ জন নিহত এবং নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২ হাজার। এছাড়া আহত হয়েছেন ৩২ হাজার ফিলিস্তিনি।

এমন পরিস্থিতিতে এক্স পোস্টে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট পেত্রো লিখেছেন, যে রাষ্ট্রের প্রধান এই গণহত্যা চালাচ্ছেন, তিনি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধী। তার মিত্রদের গণতন্ত্রের কথা বলা শোভা পায় না।

পেট্রোর এ পোস্টের একদিন আগেই গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের নিন্দা জানিয়ে কলম্বিয়া ও চিলি ইসরায়েল থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেয়।

ইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে বুধবার চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বরিক বলেন, গাজায় নির্বিচার হামলা ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।

আরেক লাতিন আমেরিকান দেশ বলিভিয়া গাজায় বোমাবর্ষণ ও অবরোধ এবং বেসামরিক হতাহতের ঘটনায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পূর্ণ সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ইসরায়েলকে গাজায় বোমা হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এক এক্স পোস্টে বলেছেন, আমরা প্রথমবারের মতো একটি যুদ্ধ দেখছি, যেখানে নিহতদের বেশিরভাগই শিশু। এ যুদ্ধ থামান। ঈশ্বরের ভালবাসার জন্য, থামুন!

লাতিন আমেরিকার আরেক দেশ আর্জেন্টিনায় বিশাল সংখ্যক ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। সেই আর্জেন্টিনাও গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়েছে। দেশটি বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনকে কিছুতেই সমর্থন করে না তারা। পাশাপাশি হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলিদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে আর্জেন্টিনা।

ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে পেরু ও মেক্সিকো। পেরুর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, সহিংসতা যারাই ঘটাক, পেরু তার নিন্দা জানায় এবং নিন্দা অব্যাহত রাখবে। একইসঙ্গে হামাসকে তাদের বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পেরু।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে মেক্সিকান কূটনীতিক অ্যালিসিয়া বুয়েনরোস্ট্রো গাজায় ইসরায়েলের দখলদারিত্বের নিন্দা জানান এবং দখলকারী শক্তিকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আগ্রাসন বন্ধ করে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পথে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হওয়া দরকার।