পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ জেলেনস্কির!

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এমনটাই মনে করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য দিয়েছে টাইম ম্যাগাজিন।

জেলেনস্কি

খবরে বলা হয়, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান জেলেনস্কি। সে সময় তাকে প্রায় বীরের মতো স্বাগত জানানো হয়েছিল। তবে গত সেপ্টেম্বরে তিনি ফের যুক্তরাষ্ট্রে গেলে পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন দেখতে পান জেলেনস্কি। এ সময় তাকে ক্যাপিটল হিলে আইনপ্রণেতাদের সামনে বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়নি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এখনও কিয়েভকে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে যেতে আগ্রহী। তবে রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদের কারণে তার এই চেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে নতুন বিল পাসের বিষয়ে আগের মতো সহজে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছে না মার্কিন কংগ্রেস। এমনকি প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন বর্তমান অবস্থায় ইউক্রেনকে বাদ রেখে ইসরায়েলকে সহায়তা দিতে বিল পাসের কথা বলেছেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

এ পরিস্থিতিতে জেলেনস্কি মনে করছেন, পশ্চিমা বিশ্ব তার সঙ্গে বা ইউক্রেনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। তারা এখন ইউক্রেনকে এ পরিমাণ সহায়তা করছে, যাতে তারা যুদ্ধে টিকে থাকতে পারে। কিন্তু এই সহায়তা দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বিজয়ী হওয়া সম্ভবপর নয়।

জেলেনস্কি নিজে টাইম ম্যাগাজিনকে বলেন, সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, পুরো বিশ্ব এখন ইউক্রেন যুদ্ধকে স্বাভাবিক একটি ঘটনা হিসেবে মেনে নিয়েছে। তারা এটা নিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। আর ক্লান্ত হয়ে পড়ার অর্থ হচ্ছে, এটি তাদের কাছে একটি ‘শো’তে পরিণত হয়েছে।

একই সঙ্গে তিনি অনুভব করতে পারেন যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতি বিশ্বব্যাপী আগ্রহ কমে গেছে। আন্তর্জাতিক সমর্থনের মাত্রাও কমে গেছে। গত জুনেও যুক্তরাষ্ট্রের ৬৫ শতাংশ মানুষ কিয়েভে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু সেপ্টেম্বরে এই সমর্থন নেমে এসেছে ৪১ শতাংশে। ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর নিশ্চিতভাবেই এ সমর্থন আরও হ্রাস পেয়েছে।

এসব বিষয়ে জেলেনস্কিও ধীরে ধীরে পাল্টে যাচ্ছেন। আগে যেমনিভাবে তিনি শান্ত ও উৎফুল্ল মেজাজে থাকতেন, সেটা হারিয়ে গেছে। এখন তার মুখে কোনো হাসি দেখা যায় না। তার ব্যাপারে এক সামরিক সদস্যকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি কেমন আছেন। এর জবাবে ওই সামরিক সদস্য জবাব দিয়েছিলেন, রাগান্বিত! এখন তিনি মিটিংয়ের সময় ভেতরে প্রবেশ করেন, আপডেট জানেন। তারপর আদেশ দেন এবং বেরিয়ে যান। তবে তিনি এখনও নিজেদের ওপর আস্থা রাখেন। তিনি মনে করেন, এখনও যথাযথ সহায়তা পেলে রাশিয়াকে পরাস্ত করা তার বাহিনীর পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়।