নথি ফাঁস: গাজার সব মানুষকে সিনাইয়ে পাঠানোর পরিকল্পনা!

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাসের পতন ঘটিয়ে সেখানকার সব বাসিন্দাকে মিশরের সিনাইয়ে পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। গত ১৩ অক্টোবর ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার ফাঁস হয়ে যাওয়া এক নথিতে এ তথ্য জানা গেছে। খবর মিডল ইস্ট মনিটর।

গাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ

জানা গেছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় এমন খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে। প্রাথমিক অবস্থায় তারা এটিকে ‘কনসেপ্ট পেপার’ (ধারণাপত্র) হিসেবে উপস্থাপন করেছে। এতে তিনটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তার তিন নম্বরে গাজাবাসীকে সিনাইয়ে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। প্রথম দুটি প্রস্তাবে বড় ধরনের গলদ থাকায় তৃতীয় প্রস্তাবটিকেই সামনে আনা হচ্ছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজে প্রকাশিত নথির উদ্ধৃতি দিয়ে খবরে বলা হয়, ইসরায়েল প্রথমে গাজার ২৩ লাখ বেসামরিক নাগরিককে উত্তর সিনাইয়ের অস্থায়ী আশ্রয়ে সরিয়ে নেবে। পরে তাদের স্থায়ী শহরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিন।

গাজা ও সিনাই

নথিতে আরও বলা হয়, গাজার বাসিন্দাদের সিনাইয়ে ঠেলে দেওয়ার পর মিশরের ভেতরে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে বাফার জোন গড়ে তোলা হবে, যেন গাজার বাসিন্দারা কোনোভাবেই ইসরায়েলি সীমান্তের কাছে ঘেঁষতে না পারে।

ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র এ নথির কথা সঠিক বলে স্বীকার করে জানিয়েছে, এ প্রস্তাব নিয়ে সরকার কোনো ধরনের আলোচনায় যাবে না। নথির এ তথ্যের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক চাপ আসার কথাও সম্ভাবনার কথাও স্বীকার করে সূত্রটি। তবে গাজার বাস্তুচ্যুত লোকজনকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালাতে সাহায্য করার উপায় হিসেবে এ প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে ইসরায়েলের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড্যানি আয়ালনও এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনের গাজার বাসিন্দাদের এ জায়গা ছেড়ে মিশরের সিনাই মরুভূমিতে চলে যাওয়া উচিত।

এদিকে এ ধরনের কোনো সম্ভাবনার কথা প্রত্যাখ্যান করেছে মিশর। গত রোববার মার্র্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনে আলাপকালে এ বিষয়ে নিজের অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। এরপরও ইসরায়েলের এ ধরনের পরিকল্পনার কারণে কায়রোর সঙ্গে ইসরায়েলের তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। কায়রো স্পষ্টভাবে বলেছে, তারা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতারণের পুরোপুরি বিপক্ষে।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহ ইসরায়েলের এ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, এ ধরনের গণ-বাস্তুচ্যুতিহবে নতুন যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। আমরা যেকোনো জায়গায়, যেকোনো ধরনের হস্তান্তরের বিরুদ্ধে। আমরা ১৯৪৮ আর ঘটতে দেবো না।