এরদোয়ানের মন্তব্যের পর তুরস্ক থেকে কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নিয়েছে ইসরায়েল

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান অভিযোগ করেছিলেন, ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধীর মতো আচরণ করছে। তার এই মন্তব্যের পরে ইসরায়েল তুরস্ক থেকে কূটনৈতিক কর্মীদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে। ২৮ অক্টোবর, শনিবার ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন এই তথ্য জানিয়েছেন।

রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান 

কোহেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘তুরস্ক থেকে আসা গুরুতর বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে, আমি ইসরায়েল ও তুরস্কের মধ্যে সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়ন করার জন্য সেখানকার কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছি।' 

শনিবার ইস্তাম্বুলে ফিলিস্তিনপন্থী এক জনসমাবেশে ভাষণ দিয়েছেন এরদোয়ান। তিনি গাজা উপত্যকায় গণহত্যা চালানোর জন্য ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা মিত্রদের ওপর তীব্র আক্রমণ করেছেন। 

তুর্কি ও ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়ানো জনতার উদ্দেশে এরদোয়ান বলেছেন, ‘গাজায় গণহত্যার পেছনে প্রধান অপরাধী হলো পশ্চিমারা। কিছু বিবেকবান কণ্ঠস্বর বাদ দিয়ে বলা যায় গাজায় গণহত্যা পুরোটাই পশ্চিমাদের কাজ। ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধীর মতো আচরণ করছে। অবশ্যই, প্রতিটি দেশেরই আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার আছে। কিন্তু এক্ষেত্রে বিচার কোথায়? কোন বিচার নেই, শুধু গাজায় ঘটছে একটি নৃশংস গণহত্যা।' 

তিনি যোগ করেন, ‘ইসরায়েল ২২ দিন ধরে প্রকাশ্যে যুদ্ধাপরাধ করছে, কিন্তু পশ্চিমা নেতারা ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির আহ্বানও জানাতে পারছে না।‘

তুর্কি প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের নির্মূলের চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন। এরদোয়ান তার বক্তব্য শেষ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তুরস্ক থেকে সমস্ত কূটনৈতিক কর্মীদের ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেয় ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমাদেরকে যুদ্ধাপরাধের জন্য অভিযুক্ত করবেন না। আপনি যদি মনে করেন যে আপনি আমাদের সৈন্যদের যুদ্ধাপরাধের জন্য অভিযুক্ত করতে পারেন, তবে তা ভণ্ডামি হবে। আমাদের সেনাবাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক সেনাবাহিনী।' 

উল্লেখ্য, তুরস্ক এবং ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের ইতিহাস রয়েছে। এক সময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র, তুরস্ক ২০১০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। সে সময় ইসরায়েলি কমান্ডোদের গুলিতে ১০ জন তুর্কি স্বেচ্ছাসেবক নিহত হয়। তারা তুরস্কের মালিকানাধীন একটি জাহাজে করে ইসরায়েল দ্বারা অবরুদ্ধ গাজাবাসীদের জন্য ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছিলেন। ২০১৬ সালে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালে গাজা-ইসরায়েল সীমান্তে বিক্ষোভের সময় ফিলিস্তিনিদের হত্যা করায় ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেছিল তুরস্ক। ২০২২ সালে দুই দেশ আবারও কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে রাজি হয়।

সূত্র: এএফপি, বিবিসি