ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ, মানবিক সংকট

ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ক্ষুব্ধ তেল আবিব গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়েছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। নিহতের সংখ্যা এরই মধ্যে দুই হাজার ৭৫০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে ১০ হাজারের বেশি মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছে হাজারও মানুষ, যাদের উদ্ধার করার মতো লোকজন বা যথাযথ ব্যবস্থা গাজা কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। খবর সিএনএন।

গাজার একটি হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুলেন্সের ভিড়

ফিলিস্তিনি নাগরিক প্রতিরক্ষা দল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বোমায় বিধ্বস্ত অনেক ভবনের নিচে মানুষজন আটকে পড়েছিল। তাদের অনেকে এরই মধ্যে মারা গেছে, অনেকে আহত অবস্থায় রয়েছে। তাদের কাউকে কাউকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়েছে, কিন্তু অনেকেই এখন পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপের নিচেই আটকা পড়ে আছে।

এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, আটকাপড়াদের অনেকে আহত অবস্থায় আছে, আবার কেউ কেউ মারা গেছে। অনেককে আবার উদ্ধারও করা সম্ভব হয়েছে।

মরদেহ রাখা হচ্ছে আইসক্রিমের গাড়িতে

গাজা কর্তৃপক্ষের বরাতে খবরে জানা গেছে, প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন আহত-নিহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে হাসপাতালে এখন জায়গা নেই। হাসপাতালেও নির্বিচার হামলা চালানোর কারণে সেখানেও যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন বা দিচ্ছেন, তাদের কেউ স্বস্তিতে নেই। এ পর্যন্ত ১১০টির বেশি স্বাস্থ্যকেন্দ্রসহ অসংখ্য অ্যাম্বুলেন্স ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছে। মারা গেছেন অনেক চিকিৎসাকর্মী।

যেগুলো এখনও হামলার বাইরে রয়েছে সেসব হাসপাতালের অবস্থাও রোগীদের চাপে বেশ শোচনীয়। সেখানেও বিদ্যুৎ, পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের চরম সংকট চলছে। আবার হাসপাতালে আনা মৃত ব্যক্তি বা হাসপাতালে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মরদেহ রাখার জায়গারও সংকট দেখা দিয়েছে। মর্গে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মরদেহ রাখা হচ্ছে আইসক্রিম ও খাবারের ফ্রিজিং গাড়িতে। এতবেশি মরদেহ জমা হয়েছে যে, তাদেরকে দাফন করার মতো যথেষ্ট জায়গাও এখন গাজায় নেই। সবমিলিয়ে বড় ধরনের সংকটময় পরিস্থিতি পার করছে গাজাবাসী।

ফিলিস্তিনিরা বলছেন, ইসরায়েলে আমাদের সবাইকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটি পরিষ্কার। গাজা উপত্যকার খান ইউনিস এলাকায় নিজ বাড়ির বাইরে বসে এ মন্তব্য করছিলেন বৃদ্ধ আবু আহমেদ। গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরদিন থেকে গাজা পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে দেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। সেখানকার বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। চরম মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন গাজাবাসী। তাদের জন্য বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার পক্ষ থেকে ত্রাণ পাঠানো হলেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ সেগুলো গাজায় পৌঁছতে দিচ্ছে না।