ব্লিঙ্কেন ফের ইসরায়েলে, নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক

এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ইসরায়েলে গেলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি সোমবার (১৬ অক্টোবর) তেলআভিভে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান সংঘাত নিয়ে আলোচনা করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। খবর বিবিসি।

ছয় আরব দেশ সফর শেষে ফের ইসরায়েলে গেলেন ব্লিঙ্কেন

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে গত ৭ অক্টোবর তুমুল সংঘর্ষ শুরুর দুদিন পর বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রতি সংহতি জানাতে তেলআভিভ যান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এরপর তিনি সৌদি আরব, বাহরাইন, মিসর, আরব আমিরাত, জর্ডান ও কাতার সফর করেন।

ছয় আরব দেশ সফর শেষে সোমবার ব্লিঙ্কেন নিজ দেশে না ফিরে আবারও ইসরায়েলে যান। আরব দেশগুলো সফরের সময় ব্লিঙ্কেন ইসরায়েল সরকারের প্রতি তার সমর্থনের কথা জানান। আজ নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নেতানিয়ার সঙ্গে বৈঠকে গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযানের পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি আপডেট পেয়েছেন ব্লিঙ্কেন।

স্টেট ডিপার্টমেন্ট আরও জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি হামাসের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একইসঙ্গে ইসরায়েলকে সাহায্য করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরায়েলকে সহায়তা করতে এরইমধ্যে অস্ত্র ও যুদ্ধসরঞ্জাম পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া গত শনিবার পূর্ব ভূমধ্যসাগরে রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। ফের দ্বিতীয় রণতরী ইউএসএস আইজেনহাওয়ার পাঠাচ্ছে বাইডেন প্রশাসন।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও রোববার এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, হামাসকে নির্মূল করা উচিত। তবে বাইডেন সতর্ক করে দিয়েছেন, গাজায় ইসরায়েলি দখলদারিত্ব একটি বড় ভুল হবে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর আরও জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর সঙ্গে ব্লিঙ্কেনের বৈঠকে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানে সহায়তা করার জন্য জাতিসংঘ এবং আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে মার্কিন সমন্বয়ের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

গাজায় মানবিক সঙ্কট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সেখানে গত ৯দিন ধরে প্রচণ্ড বোমা হামলা চালানোর মধ্যেই খাবার, পানি ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। এরপর প্রস্তুতি নিচ্ছে স্থল অভিযানের। যেকোনো মুহূর্তে স্থল হামলা চালাতে সীমান্তে জড়ো হয়েছে লাখ লাখ ইসরায়েলি সেনা এবং তাদের সাঁজোয়াবহর-ট্যাংক।

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। খাবার-পানির অভাবে মুমূর্ষু অবস্থায় হাজার হাজার বাসিন্দা। লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছে। প্রতি দিন প্রাণ হারাচ্ছে নারী-শিশুসহ বেসামরিক লোকজন।

৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলায় গাজায় ২৭০০ জনের বেশি নিহত এবং ৯ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। ওইদিন হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১৪০০ জন নিহত হয়। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৩ নাগরিক নিহত হয়েছে।