ফিলিস্তিনিদের মরদেহ রাখা হচ্ছে আইসক্রিম ও খাবারের ট্রাকে, জায়গা নেই মর্গে

ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় পুরোপুরি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। চারপাশে কেবল মরদেহের সারি। দাফনের মতো জায়গা নেই। জায়গা নেই হাসপাতালের মর্গেও। উপায়ান্তর না দেখে এসব মরদেহ এখন রাখা হচ্ছে আইসক্রিম ও খাবারের ট্রাকে। খবর সিএনএন ও আল জাজিরা।

আইসক্রিমের গাড়িতে মরদেহ

প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মর্গে জায়গা না পেয়ে আইসক্রিমের ট্রাক রেফ্রিজারেটর সুবিধা থাকা খাবার বহনকারী গাড়িতে মরদেহ রাখা হচ্ছে। মর্গে মরদেহের স্থান সংকুলান না হওয়ায় স্থানীয় কয়েকটি ফ্যাক্টরি থেকে এসব গাড়ি আনিয়েছে গাজার একটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই হাসপাতালের ফরেনসিক প্যাথলজিস্ট ইয়াসির খাত্তাব বলেন, হাসপাতালের মর্গে মাত্র ১০টি মরদেহ রাখার মতো জায়গা রয়েছে। প্রতিদিন এত মরদেহ আসছে। মর্গে আর জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়ে আইসক্রিমের গাড়িতে মরদেহ রাখতে হচ্ছে।

তবে ইয়াসির খাত্তাব জানান, পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ফ্রিজারগুলোতেও জায়গা শেষ হয়ে গেছে। তাই কিছু মরদেহ তাঁবুতেও রাখা হয়েছে। মরদেহ দাফনের ব্যাপারে তিনি বলেন, গাজা উপত্যকায় জায়গার সংকট রয়েছে। কবরস্থানগুলো ইতিমধ্যে ভরে গেছে। মৃতদের কবর দেওয়ার জন্য আমাদের এখন নতুন জায়গা প্রয়োজন।

ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ধ্বংসস্তূপ পরিণত হয়েছে গাজা। ইসরায়েলিদের হামলায় এ পর্যন্ত ১৫টি হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি হাসপাতালের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এ সময় ২৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন। পরিষেবা দেওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়েছে ২৩টি অ্যাম্বুলেন্স।

গত ৭ অক্টোবর কয়েক দশকের মধ্যে ইসরায়েলে সবচেয়ে মারাত্মক হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস। এরপর এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গাজায় অব্যাহত হামলা চালাচ্ছে। এ হামলায় এরই মধ্যে দুই হাজার ৪৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের সিংহভাগই বেসামরিক নাগরিক।