প্রথমবার কোরআন অবমাননার জন্য একজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে সুইডেন

সুইডেনের একটি আদালত ২০২০ সালে কোরআন পোড়ানোর সঙ্গে জড়িত থাকায় জাতিগত বিদ্বেষের অপরাধে একজন ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। প্রথমবারের মতো দেশটির আদালত ইসলামের পবিত্র গ্রন্থকে অবমাননা করার অভিযোগের বিচার করেছে।

কোরআন

১২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার মধ্য সুইডেনের লিঙ্কোপিং শহরের একটি আদালত ২৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে একটি জাতিগত গোষ্ঠীকে টার্গেট করার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছে। আদালত জানিয়েছে, তার এ ধরনের কর্মকাণ্ড মুসলমান এবং ইসলামকে টার্গেট করে করা হয়েছিল।  

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে, ওই ব্যক্তি লিঙ্কোপিং ক্যাথেড্রালের বাইরে একটি ভিডিও ক্লিপ রেকর্ড করেছিল। এতে দেখা যায়, বারবিকিউতে একটি কোরআন এবং বেকন (শুকনো শুকরের মাংস) পোড়ানো হচ্ছে। এছাড়া বারবিকিউয়ের নীচে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) সম্পর্কে কটূক্তিমূলক মন্তব্য ছিল।  

ওই ব্যক্তি সে সময় ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টুইটার (বর্তমানে এক্স) এবং ইউটিউবে প্রকাশ করেছিল। ভিডিওটিতে ‘রিমুভ কেবাব’ নামের একটি গান ব্যবহার করা হয়েছিল। এই গানটি অতি ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়। এতে মুসলমানদের ধর্মীয় শুদ্ধির আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া ওই ব্যক্তি লিঙ্কোপিং মসজিদের বাইরে কোরআনের পোড়ানো কপি এবং বেকন রেখে দিয়েছিল।   

সুইডিশ আদালত বলেছে ‘গানটি ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে হামলার সময় বাজানো হয়েছিল।' সে সময় একজন অস্ট্রেলিয়ান শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলা করে ৫১ জনকে হত্যা করেছিল।  

কোরআন পোড়ানোর জন্য দোষী সাব্যস্ত ওই ব্যক্তি তার দোষ স্বীকার করেনি বরং যুক্তি দিয়ে বলেছিল, তার কর্মটি একটি ধর্ম হিসাবে ইসলামের সমালোচনা ছিল। কিন্তু আদালত সেই যুক্তি খারিজ করে দেয়।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুর দিকে সুইডেনে বেশ কয়েকটি কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে। এর ফলে মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সুইডিশ সরকার এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। একইসঙ্গে বলেছে, দেশটির সংবিধানে মতপ্রকাশের যে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে তার কারণে তারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে প্রতিরোধ করতে পারবে না।

সূত্র: এএফপি