আইডিএফ: এমন ভয়াবহতা আগে কখনো অনুভব করিনি

গত শনিবার সকালে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে কয়েক হাজার রকেট নিক্ষেপ করে হামাস। এতে ইসরায়েলের সেনাসদস্যসহ সাত শতাধিক নিহত এবং দুই হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এছাড়াও, হামাসের হাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে।

ইসরায়েলি ট্যাংক ধ্বংস করে উল্লাস করছে হামাস সদস্যরা

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের মুখপাত্র মেজর লিবি ওয়েইস বলেন, গত শনিবার ইসরায়েলের ইতিহাসে বেসামরিক লোকজনের ওপর চালানো সবচেয়ে জঘন্যতম গণহত্যা ঘটেছে। এটি এমন কিছু যা আমরা আগে কখনো অনুভব করিনি এবং এ সময় আমরা যে ভয়াবহতা দেখেছি তা ভাষায় বর্ণনা করা প্রায় কঠিন।

ইরানের সমর্থন পেয়ে হামাস এই হামলা চালানোর সুযোগ পেয়েছে বলে মনে করছে ইসরায়েল। আইডিএফের মুখপাত্র বলেন, আমরা জানি ঐতিহাসিকভাবে ইরান হামাসের খুব শক্তিশালী সমর্থক। আর সে কারণে স্বাভাবিকভাবেই আমরা বিশ্বাস করি, হামাস যে কাজগুলো করছে তাতে ইরানের ভূমিকা রয়েছে।

ইসরায়েলের আয়রন ওয়াল ভেঙে ফেলেছে হামাস

জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে ইসরায়েল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন বলেন, আমরা তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা হামাসের কাছে দাবি করছি, যেন জিম্মিদের কারো ক্ষতি না করা হয়।

হামলার কারণ

ইসরায়েলে হামাসের হামলার কারণ হিসেবে অনেকে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণকে ঘিরে বিরোধকে দেখছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ইসরায়েলি ধর্মীয় জাতীয়তাবাদীরা আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে তাদের পরিদর্শন বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

হামাস দাবি করেছে, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপগুলো ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে একটি সামরিক আগ্রাসনের অংশ। তারা এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চায়।

হামলার প্রভাব

ইসরায়েলে হামাসের হামলার ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই উত্তেজনা আরও সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

হামলার ফলে ইসরায়েলের অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়তে পারে। ইসরায়েলের পর্যটন শিল্পের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ইসরায়েলে হামাসের হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দা জানানো হয়েছে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

হামলার পর ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে হামাসের অনেক ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে এবং হামাসের অনেক সদস্য নিহত হয়েছে।

বুধবার গাজা নিয়ে বৈঠক করবেন আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে ১১ অক্টোবর, বুধবার আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছে আরব লিগ। ৯ অক্টোবর, সোমবার আরব দেশগুলোর জোট এক বিবৃতিতে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

আরব লিগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিদের অনুরোধের কারণে বিশেষ এই অধিবেশনের সময় নির্ধারিত হয়েছে।

আরব লিগের ডেপুটি চিফ হোসাম জাকি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কায়রোতে অনুষ্ঠেয় বিশেষ এই বৈঠকে আরব ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার উপায় খুঁজে বের করা হবে। কারণ ৭ অক্টোবর, শনিবার হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজার বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে আঘাত হানছে। ফলে নিরীহ নারী-শিশুদের রক্ষার জন্য শিগগিরই কোনো পদক্ষেপ নিতে হবে।'