ইসরায়েল-হামাস সংঘাত: চীনের অবস্থানে হতাশ যুক্তরাষ্ট্র

হামাস-ইসরায়েল চলমান সংঘাতে তেলআবিবের পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা অনেক দেশ। অন্যদিকে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে তুরস্ক, সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, কাতার, কুয়েত, আরব আমিরাত ও লেবাননসহ বেশকিছু আরব দেশ। এ অবস্থায় সংঘাত অবসানে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন আলাদা দুই স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলছে চীন। বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক ইস্যুটিতে নিজেদের এ অবস্থানের কথা জানায়। তবে চীনের এ অবস্থানে হতাশ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর রয়টার্স।

চাক শুমার

গত রোববার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চলমান সংঘাতে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে শান্ত থাকতে এবং বেসামরিক নাগরিকদের হামলার লক্ষ্যবস্তু না বানাতে অনুরোধ জানায়। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের এ সংকট নিরসনে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা বা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দুটি পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকেই এই সংকটের যোগ্য সমাধান বলে উল্লেখ করেছে বেইজিং।

চলমান সংকটের ব্যাপারে মুখ খুললেও নিজেদের বক্তব্যের কোথাও হামাসের নিন্দা বা ইসরায়েলিদের প্রতি বাড়তি সহমর্মিতা দেখায়নি চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে চরমভাবে হতাশ যুক্তরাষ্ট্র বেইজিংয়ের ওপর চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

গাজায় হামলা

মার্কিন সিনেটের নেতা চাক শুমার বেইজিং সফরে সোমবার (৯ অক্টোবর) চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ইয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে কোনো রাখঢাক ছাড়াই তিনি বলেন, সত্যি বলতে, চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আমরা খুবই হতাশ। তারা এই সংকটময় সময়ে ইসরায়েলের প্রতি কোনো ধরনের সহানুভূতি বা সমর্থন দেখায়নি।

শুমারের এ মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, হামাস ও ইসরায়েলের সংঘাত নিয়ে চীন ‘অত্যন্ত উদ্বিগ্ন’। এ সংঘাতে বেসামরিক লোকজন হতাহতের ঘটনায় আমরা খুবই ব্যথিত। আমরা বেসামরিক লোকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা ও নিন্দা জানাই। আরও মৃত্যু এড়াতে চীন যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মাও নিং।

তিনি বলেন, চীন ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েল উভয়েরই বন্ধু এবং আন্তরিকভাবে উভয় পক্ষের শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান কামনা করে। আমরা বিশ্বাস করি, এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি কাজ হলো যুদ্ধবিরতি এবং শান্তি পুনরুদ্ধার করা। আমাদের প্রত্যাশা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যৌথভাবে উত্তেজনা শান্ত করতে সাহায্য করবে।

চীন বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ক্ষতিকর যে কোনো আচরণের নিন্দা করে জানিয়ে মাও বলেন, সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হলো শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করা, দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়ন করা এবং ফিলিস্তিন সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের জন্য চাপ দেওয়া। এক্ষেত্রে বেইজিং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বলে উল্লেখ করেন তিনি।