আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে মৃত্যু ছাড়াল ২০০০

আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ২০৬০ জন নিহত এবং ১২ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। অসংখ্য ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন বহু মানুষ। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। খবর বিবিসি ও আল জাজিরা।

হেরাতে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপে চলছে নিখোঁজদের উদ্ধার তৎপরতা

হেরাত থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। কিছুক্ষণের মধ্যে অন্তত তিনটি শক্তিশালী আফটারশক ঘটে। এর মাত্রা ছিল ৪.৬ থেকে ৬.৩। স্থায়িত্বকাল ছিল প্রায় এক ঘণ্টা।

রবিবার হেরাত প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রধান মোসা আশরি বলেন, ভূমিকম্পে ২০০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এখন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি আহত নারী, শিশু এবং বয়স্ক নাগরিককে রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে।

তিনি জানান, কয়েক হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। গ্রামীণ ও পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হয়েছে। নিখোঁজদের স্বজন ও স্থানীয়রা রাতভর ধ্বংসস্তূপে আটকেপড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়েছেন। ভবনের ধ্বংসস্তুপের কারণে অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছতেও সমস্যায় পড়ছেন।

আফগানিস্তানের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল ওয়াহিদ রায়ান নিশ্চিত করেছেন, ২০৬০ জন মারা গেছেন, আহত হয়েছে ১২৪০ জন। এছাড়া ১৩২০টি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

আফগানিস্তানের তালেবান কর্তৃপক্ষ ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়াদের উদ্ধারে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। কাতারে অবস্থানরত তালেবান মুখপাত্র সুহাইল শাহিন বলেন, নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। এখনো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তুপের নিচে পড়ে আছে।

ভূমিকম্প সম্পর্কে হেরাতের বাসিন্দা বশির আহমেদ বলেন, আমরা অফিসে ছিলাম এবং হঠাৎ করেই ভবনটি কাঁপতে শুরু করে। একপর্যায়ে দেয়ালে ফাটল দেখা দেয় । আমাদের চারপাশ দিয়ে দেয়াল ও ভবনের অংশ ধসে পড়ে।

এদিকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখানে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। হেরাত সেন্ট্রাল হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হাসপাতালের প্রধান ভবনের বাইরে রেখেই অসংখ্য আহতকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আফগানিস্তানে প্রায়ই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে ইউরেশিয়ান ও ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের কাছে হওয়ায় দেশটিতে ভূমিকম্প বেশি হয়ে থাকে।

গত বছরের জুনে পাকতিকা প্রদেশে ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানলে ১ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায় এবং কয়েক হাজার বাসিন্দা গৃহহীন হয়।