তাসকিনকে সবুজ উইকেটের হাতছানি

পেসারদের স্বর্গরাজ্য কোন দেশ? এমন প্রশ্নের উত্তরে যে দেশগুলোর নাম আসবে, কোনো সন্দেহ নেই, তাতে উপরের দিকেই থাকবে নিউজিল্যান্ডের নাম। সেই নিউজিল্যান্ডের সবুজ উইকেট এবার হাতছানি দিচ্ছে তাসকিন আহমেদকে। পেসারদের স্বর্গরাজ্যেই টেস্ট অভিষেক হতে যাচ্ছে তাসকিনের।

বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত টেস্ট অভিষেকের মালিকই কি হয়ে যাচ্ছেন তাসকিন! স্রেফ মজা করেই কথাটা বলা হলো। কিন্তু আসলেই কি তা নয়?

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তাসকিন তার সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন বেশ আগেই। ওয়ানডে অভিষেকে ভারতের পাঁচ পাঁচটি উইকেট উপড়ে ফেলে তাসকিন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, নিজের দিনে তিনি যে কোনো ব্যাটিং লাইন ধ্বংস করে দিতে পারেন। ভারতের সেই ব্যাটিং লাইনটা যদিও ‘এক নম্বর’ ছিলো না, কিন্তু তাই বলে হেলা করার মতোও ছিলো না।

প্রতীক্ষিত টেস্ট অভিষেকের আগে আজ সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন তাসকিন। ওয়েলিংটনেই তার গায়ে জাতীয় দলের সাদা জার্সি উঠছে কিনা, তা এখনো যদিও নিশ্চিত নয়, তারপরও তাসকিন বললেন, ‘আমি নিজেকে সৌভাগ্যবানই বলবো। কারণ নিউজিল্যান্ডে আবার টেস্ট অভিষেক হচ্ছে। অন্য যে কোনো দেশে টেস্ট অভিষেক হলেও অবশ্য নিজেকে সৌভাগ্যবানই ভাবতাম।’

তারপরও নিউজিল্যান্ডকে অভিষেক বলে একটু হলেও নিশ্চয় বেশিই খুশি তাসকিন। এর মূল কারণ হলো, ঐতিহ্যগতভাবে নিউজিল্যান্ডের উইকেট বরমাল্য বাড়িয়ে দেয় পেসারদের দিকেই।

নিউজিল্যান্ড- বাংলাদেশের সীমিত ওভারের সিরিজে স্পোর্টিং উইকেট দেখা গেছে। কিন্তু টেস্টে সে রকম হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। সবুজ উইকেটে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের জন্য মরণ ফাঁদই তৈরি করেছে কিউইরা। সেটা নিয়ে অবশ্য মাথা ঘামানোর কথা নয় তাসকিনের।

তার চিন্তাজুড়ে বরং, সবুজ উইকেটের নিজের সামর্থ্যের পুরোটা নিংড়ে দেয়া। কিউই পেসাররা যদি সবুজ উইকেটে তামিম- ইমরুলদের বিপদে ফেলার আয়োজন করে থাকেন, তাসকিনও নিশ্চয় কিউই ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস ছুটিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা কষছেন।

তাসকিন বলেন, ‘উইকেট দেখলাম সবুজ। এমন উইকেটে বোলিংটা আমি উপভোগই করবো। অন্য বোলাররাও উইকেট দেখে খুব খুশি হয়েছে।’

তাসকিনের কিছুটা সমস্যা হতে পারে দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে না খেলার অনভ্যস্ততা। একেবারে যে খেলেননি, তা নয়। কিছু খেলেছেন বটে, তবে তা অপ্রতুল। তাসকিন অবশ্য অতশত ভাবছেন না। এ প্রসঙ্গে বললেন, ‘আমি হয়তো খুব বেশি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেনি। কিন্তু সব সময় চেষ্টা করেছি নিজের বোলিং সামর্থ্য বাড়াতে। আগের চেয়ে সেটা বেড়েছেও। কোচিং স্টাফরা আমাকে সব সময় সহায়তা করছেন।’

অনভিজ্ঞতার ব্যাপারটাকে তাই সামনেই আনছেন না তাসকিন। বরং সবুজ উইকেটের হাতছানিতে দিতে চাইছেন স্বতস্ফূর্ত সাড়া। তাসকিন ভালো করেই জানেন যে, উইকেটের সঙ্গে যদি একবার সখ্য তৈরি করতে পারেন, তবে অনভিজ্ঞতার কথা কারো মনেই থাকবে না!