ওরিয়ন নেবুলায় ভাসছে বৃহস্পতির চেয়েও বড় কিছু

হতবাক করেছে বিজ্ঞানীদেরও। পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্রগঠনকারী অঞ্চল ওরিয়ন নেবুলা, যাকে বলা হয় আদমসুরত বা কালপুরুষ। সেই নাক্ষত্রিক নার্সারিতে ভাসছে অসংখ্য বিশালকায় কিছু। সেগুলো না নক্ষত্র, না গ্রহ! তবে সেগুলোর প্রত্যেকটিই সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতির (জুপিটার) মতো বিশাল।

নাসার টেলিস্কোপ জেমস ওয়েবের ক্যামেরায় ওরিয়ন নেবুলায় ভাসমান বস্তু

নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে এইসব আশ্চর্য মুক্ত-ভাসমান বস্তুর সমাহার। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির (ইএসএ) বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কার সবাইকে কীভাবে গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি হয়, সেই সম্পর্কে নতুন জ্ঞান দেবে।

আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, নীহারিকা, যেখানে গ্যাস- ধূলিকণার বিশাল মেঘের মধ্যে তারার জন্ম হয়, সেখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গ্রহ-আকৃতির বস্তু তৈরি হতে পারে না। তবে জেমস ওয়েবের নতুন অনুসন্ধান বিজ্ঞানীদের সেই ভুল ভাঙতে যাচ্ছে।

ইএসএর বিজ্ঞানী স্যামুয়েল পিয়ারসন জানান, গ্রহের গঠন, নক্ষত্র গঠন - বা উভয় বিষয়ে আমাদের বোঝার মধ্যে কিছু ভুল আছে। নীহারিকায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে গ্রহ-আকৃতির বস্তু তৈরি হতে পারে। এমনকি আরও বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, বস্তুগুলো পৃথকভাবে নয়, জোড়ায় জোড়ায় গঠিত হয়েছে।

নতুন এই বস্তুগুলোকে বলা হচ্ছে, জুপিটার ম্যাস বাইনারি অবজেক্টস, বা জুমবোও (JuMBO)। এগুলো নক্ষত্র হওয়ার জন্য যথেষ্ট বড় নয়। আবার যেহেতু সেগুলো একটি তারা বা নক্ষত্রের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে না, তাই এগুলো কৌশলগতভাবে গ্রহও নয়।

ইএসএর বিজ্ঞান ও অনুসন্ধানের সিনিয়র উপদেষ্টা প্রফেসর মার্ক ম্যাককঘরিয়ান বলেন, গ্রহ কোনটি এবং কোনটি গ্রহ নয়, সে বিষয়ে আমাদের বেশিরভাগেরই এই বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার সময় নেই।

ম্যাককঘরিয়ানের গবেষণা পত্র অনুসারে, জুমবোর বয়স প্রায় এক মিলিয়ন বছর, যা তাদের মহাবিশ্বের অন্যদের তুলনায় তরুণ সদস্য হিসেবেই বিবেচনা করে। তাদের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় এক হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৮০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। এগুলো মূলত গ্যাস দিয়ে তৈরি। যেখানে জীবনের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সূত্র:  আল জাজিরা।