ট্রিলিয়ন ডলারের ক্লাবে সৌদি আরব

সৌদি আরবের অর্থনীতি প্রথমবারের মতো ট্রিলিয়ন ডলারের ক্লাবে প্রবেশ করেছে। দেশটির মোট দেশীয় উৎপাদন (জিডিপি) এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (চার দশমিক ১৫ ট্রিলিয়ন রিয়াল) ছাড়িয়ে গেছে। সৌদি আরবের ৯৩তম জাতীয় দিবসে এই তথ্য জানিয়েছে সৌদি ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফেডারেশন অব সৌদি চেম্বারস (এফএসসি)। সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাতে এ খবর জানিয়েছে আরব নিউজ। 

সৌদি অর্থনীতি বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে

২০২২ সালে সৌদি আরবের অর্থনীতিতে আট দশমিক সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটি জি-২০ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশটির জিডিপিতে বেসরকারি খাতের অবদান বেড়েছে এবং বেসরকারি বিনিয়োগও বৃদ্ধি পেয়েছে। বেসরকারি খাতে কর্মীসংখ্যাও বেড়েছে। 

জিডিপিতে বেসরকারি খাত এক দশমিক ৬৩ ট্রিলিয়ন সৌদি রিয়াল যোগ করেছে, যা মোট জিডিপির ৪১ শতাংশ। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ। দেশটিতে মোট বেসরকারি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০৭ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন সৌদি রিয়াল। যার প্রবৃদ্ধি হার ৩২ দশমিক ছয় শতাংশ।

২০২১ সালে বেসরকারি খাতে কর্মীসংখ্যা ছিল আট দশমিক শূন্য আট মিলিয়ন, ২০২২ সালে তা বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে নয় দশমিক ৪২ মিলিয়নে। এক্ষেত্রেও প্রবৃদ্ধির হার বেশ ভালো; ১৬ দশমিক ছয় শতাংশ।

বেসরকারি খাতে সৌদি নাগরিকের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টিও বেশ স্বস্তিদায়ক। ২০২১ সালে যেখানে ১৯ লাখ ১০ হাজার সৌদি নাগরিক বেসরকারি খাতে কর্মরত ছিল, এখন সংখ্যাটি প্রায় ২২ লাখ।

সৌদি আরবের অর্থনীতি উন্নতির প্রধান কারণ

তেলের দাম বৃদ্ধি: ২০২২ সালে তেলের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়, যা সৌদি আরবের রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।

বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধি: সৌদি আরব সরকার বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণ: সৌদি আরব সরকার তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।

দেশটির পরিসংখ্যান সংস্থা গ্যাস্টাট জানাচ্ছে, ২০২২ সালে দেশটির অর্থনীতিতে হাইড্রোকার্বন খাতের অবদান ছিল এক দশমিক ৬১ ট্রিলিয়ন রিয়াল, যা মোট অর্থনীতির ৩৯ শতাংশ। অপরদিকে তেলবহির্ভূত খাতের অবদান ছিল দুই দশমিক তিন ট্রিলিয়ন রিয়াল, যা দেশটির মোট জিডিপির ৬১ শতাংশ।

ইতিবাচক প্রভাব

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি: তেলের দাম বৃদ্ধি এবং বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধির কারণে সৌদি আরবের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে।

জনজীবনে উন্নতি: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে সৌদি আরবের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে।

কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি: অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির কারণে সৌদি আরবে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

অর্থনীতিতে সার্বিক ইতিবাচকতার কারণে সৌদি আরবের পণ্য ও সেবার রপ্তানি বেড়েছে ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০২১ সালে যেখানে রপ্তানি সক্ষমতা ছিল ৩৩ শতাংশ, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ শতাংশে। সবমিলিয়ে সৌদি আরবের অর্থনীতি সঠিক পথেই এগুচ্ছে।