৯ মে হামলার জন্য ইমরানকে অভিযুক্ত, হতে পারে মৃত্যুদণ্ড

পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ‘অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৯ মে তার সমর্থকদের রাষ্ট্রীয় ভবনে হামলার জন্য প্ররোচিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে। খবর ডন, হিন্দুস্তান টাইমস।

ইমরান খান

পাঞ্জাব পুলিশ পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির চেয়ারম্যান ইমরান খান এবং অন্যান্য পিটিআই নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে ৯ মে সামরিক ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলার জন্য সমর্থকদের উসকানি দেওয়ায় ‘অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ এনেছে।

সরকারি সূত্র জানায়, সন্ত্রাসবিরোধী ও অন্যান্য আইনে তার বিরুদ্ধে ৫০টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডির বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া সারগোধায় ৯টি, শেখুপুরায় সাতটি, ফয়সালাবাদে পাঁচটি এবং গুজরানওয়ালায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সূত্রটি বলেছে, পাঞ্জাব পুলিশ সম্প্রতি ১২১, ১৩১ এবং ১৪৬ ধারায় ইমরানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া বা যুদ্ধ করার চেষ্টা করা বা যুদ্ধে মদদ দেওয়া, বিদ্রোহে প্ররোচিত করা এবং দাঙ্গার উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ এনেছে।

২০ সেপ্টেম্বর, বুধবার মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন লাহোর পুলিশের জ্যেষ্ঠ তদন্ত কর্মকর্তা আনুশ মাসুদ। তিনি বলেছেন, পুলিশ লাহোরে ৯ মের ঘটনাগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চালিয়েছে। সেনাবাহিনীর ওপর হামলা এবং জনগণকে উসকানি দেওয়ার পিছনে ইমরান খান মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। এই বিষয়ে পুলিশের কাছে যথেষ্ট প্রমাণও রয়েছে।

মাসুদ বলেছেন, খান এবং তার সঙ্গীরা দাঙ্গা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে উস্কানি, বিদ্রোহ উস্কে দেওয়া এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার চেষ্টা করাসহ আরও ৯টি অপরাধের মুখোমুখি হবেন। পুলিশ তদন্তকারীরা এবং প্রসিকিউটররা মামলার একটি চালান প্রস্তুত করেছেন এবং লাহোরে সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে এটি জমা দেওয়া হবে।

এদিকে পুলিশ বলেছে, ৯ মে সহিংসতার সময় ঘটনাস্থলে পিটিআই চেয়ারম্যান অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তিনি তার সমর্থকদের উস্কানি দিয়েছিলেন এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পরিকল্পনা করেছিলেন বলে প্রমাণ রয়েছে।

ইমরান খান ৫ আগস্ট থেকে পাঞ্জাব প্রদেশের অ্যাটক কারাগারে রয়েছেন। তাকে তোশাখানা (উপহার) মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে ওই মামলায় উচ্চ আদালত রায় স্থগিত করার পর তিনি জামিন পান। তবে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে সাইফার মামলায় তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়। এই মামলায় জামিন চেয়ে তিনি ইসলামাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।

উল্লেখ্য, ৯ মে দুর্নীতির একটি মামলায় ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর ফলে দেশব্যাপী ব্যাপক সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দেখা দেয়। সে সময় রাওয়ালপিন্ডিতে সামরিক সদর দপ্তরসহ ডজনখানেক সামরিক স্থাপনা এবং সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার শতাধিক গাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। ইমরান এবং পিটিআই এর অন্যান্য নেতা ও শত শত কর্মীদের বিরুদ্ধে ৯ মে লাহোরের কর্পস কমান্ডার হাউজ এবং আসকারি টাওয়ারে হামলার অভিযোগ রয়েছে।