পুতিন: সম্পদে টান পড়লেই শান্তি আলোচনায় আসবে ইউক্রেন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন সম্ভবত তখনই শান্তি আলোচনা শুরু করবে যখন তার সম্পদের অভাব শুরু হবে। সেই সঙ্গে পশ্চিমা মিত্রদের দেওয়া অস্ত্রের সরবরাহে টান পড়লেই তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে। গতকাল মঙ্গলবার রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তক শহরে শুরু হওয়া ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। খবর তাস ও আল আরাবিয়া।

পুতিন

পুতিন দাবি করেন, ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ ব্যর্থ হয়েছে। এই আক্রমণ থেকে তারা উল্লেখযোগ্য কোনো ফল অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং এই সময়ে তারা আরও ৭১ হাজার ৫০০ সেনাসদস্য ও কর্মকর্তাকে হারিয়েছে। পাল্টা আক্রমণ চালাতে গিয়ে কিয়েভ ৫৪৩টি ট্যাঙ্ক এবং বিভিন্ন ধরনের প্রায় ১৮ হাজার সাঁজোয়া যান হারিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন পুতিন।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, পশ্চিমা মিত্রদের চাপে ইউক্রেন তথাকথিত একটি পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে। কিন্তু এতে তাদের কোনো জয় নেই, কোনো অর্জন নেই। বরং এ হামলা চালাতে গিয়ে তারা সাড়ে ৭১ হাজার সামরিক কর্মী হারিয়েছে। ইউক্রেন যথাসম্ভব মাটি কামড়ে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চেয়েছিল। পশ্চিমাদের দেওয়া উৎসাহেই মূলত তারা এ হামলা চালাতে আগ্রহী হয়ে ওঠে।

ইউক্রেনে মার্কিন অস্ত্র

কিন্তু ধীরে ধীরে ইউক্রেনীয় বাহিনীর সম্পদ, তাদের জনবল, সরঞ্জাম, গোলাবারুদ শেষ হয়ে আসছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের আলোচনার টেবিলে ডেকে আসছি। কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। এখন তারা আলোচনার টেবিলে বসতে চাইবে। তাদের জনবল, সামরিক সরঞ্জাম, গোলাবারুদ ইত্যাদি সবকিছু যখন শূন্যের কোঠায় এসে পৌঁছবে, তখন কিয়েভ বলা শুরু করবে, আমরা বহুদিন ধরে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করতে চাইছি, কিন্তু তারা কিছুতেই রাজি হচ্ছে না।

পুতিন বলেন, অনেকে তার কাছে জানতে চায় এ সংঘাত কবে শেষ হবে। রাশিয়া এ লড়াই বন্ধ করতে প্রস্তুত কি না। এর জবাবে তিনি বলেছিলেন, মস্কো যতক্ষণ পর্যন্ত ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের মুখোমুখি হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন না।

শান্তি আলোচনায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আগে ইউক্রেনকে রাশিয়ার ওপর থেকে যে কোনো ধরনের আলোচনার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। তারপর তাদের ঘোষণা করতে হবে, তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত। ব্যস! এতটুকুই যথেষ্ট হবে। পরেরটা আমরা দেখব।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে কিয়েভের সঙ্গে শান্তি সংলাপ শুরু করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। কিন্তু সেই কাঙ্ক্ষিত সংলাপের দেখা মেলেনি দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা এ যুদ্ধে।