মোদি: সৌদি আরব ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরবকে দেশটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হিসেবে অভিহিত করেছেন। ১১ সেপ্টেম্বর, সোমবার নয়াদিল্লিতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। সে সময় এই মন্তব্য করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী।

মোদি ও সালমান

মোদি বলেছেন, ‘ভারত এবং সৌদি আরবের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আঞ্চলিক, বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ও কল্যাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।' তিনি সৌদি আরবকে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হিসাবে বর্ণনা করে বলেন, ‘উভয় পক্ষই পরিবর্তনশীল সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার মাধ্যমে সম্পর্কের নতুন মাত্রা যোগ করেছে।'

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যকার এই ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ চিহ্নিত করা হয়েছে। আজকের বৈঠকে আমাদের সম্পর্ক একটি নতুন দিক ও শক্তি পাবে।'

২০১৯ সালে মোদির সৌদি সফরের সময় ভারত-সৌদি আরব কৌশলগত অংশীদারি পরিষদ ঘোষণা করা হয়েছিল। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে এই সফর করেছিলেন তিনি।

সৌদি যুবরাজ ৯ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ১৮তম জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য ভারত এসেছিলেন। ১০ সেপ্টেম্বর এই সম্মেলন শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি ভারতে থেকে যান। তিনি বর্তমানে দেশটিতে রাষ্ট্রীয় সফরে রয়েছেন।

সোমবার ভারতীয় রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হয়েছিল। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমি ভারতে এসে খুবই আনন্দিত। আমি জি-২০ সম্মেলনের জন্য ভারতকে অভিনন্দন জানাতে চাই। শীর্ষ সম্মেলনে যেসব ঘোষণা দেয়া হয়েছে তা বিশ্ববাসীর জন্য সুবিধা বয়ে আনবে। আমরা উভয় দেশের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যত তৈরি করতে একসঙ্গে কাজ করব।'

সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যে ভারতের অন্যতম প্রধান কৌশলগত অংশীদার। গত কয়েক বছরে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। উভয় পক্ষ তাদের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব জোরদার করার দিকে মনোনিবেশ করেছে।

সোমবার ভারত-সৌদি আরব কৌশলগত অংশীদারি পরিষদের প্রথম বৈঠকে মোদি এবং যুবরাজ মোহাম্মদ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করেন। এ সময় দুই দেশ জ্বালানি খাতে সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

এই সমঝোতা স্মারক অনুসারে, ভারত এবং সৌদি আরব নবায়নযোগ্য জ্বালানি, হাইড্রোজেন, বিদ্যুৎ এবং দুই দেশের মধ্যে গ্রিড আন্তঃসংযোগ, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস ও কৌশলগত পেট্রোলিয়াম রিজার্ভে সহযোগিতা করবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া ডিজিটাল রূপান্তর, উদ্ভাবন এবং সাইবার-নিরাপত্তা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতা করবে।

উল্লেখ্য, মোহাম্মদ বিন সালমান এর আগে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত গিয়েছিলেন। এবার নিয়ে তিনি দুই বার দেশটি সফর করেন।