আফগানদের গুঁড়িয়ে এগিয়ে থাকল বাংলাদেশ

ওয়ানডে সংস্করণে কোনো দল যখন সোয়া তিন শ’ ছাড়িয়ে যায় তখন ম্যাচের ভাগ্যটা অনুমান করতে বেগ পেতে হয় না। অনুমিতভাবেই বাংলাদেশের রানপাহাড় ডিঙাতে পারেনি আফগানিস্তান। আজ লাহোরে এশিয়া কাপের ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে টাইগাররা জিতেছে ৮৯ রানের বিরাট ব্যবধানে। এই জয়ে সুপার ফোরের টিকিট একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গেল সাকিব আল হাসানদের।

মেহেদি হাসান মিরাজকে ঘিরে বাংলাদেশের উদযাপন

টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নাজমুল হাসান শান্ত ও মেহেদি হাসান মিরাজের সেঞ্চুরির ওপর দাঁড়িয়ে পাঁচ উইকেটে ৩৩৪ রানের পাহাড় গড়ে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সংস্করণে বিদেশের মাটিতে এটাই টাইগারদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। সবমিলিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এই রান তাড়া করতে নেমে ম্যাচের ৩৩ বল বাকি থাকতে ২৪৫ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান।

বাংলাদেশের জয়ে সুতোয় ঝুলে গেল আফগানদের এশিয়া কাপ ভাগ্য। একই সঙ্গে ‘বি’ গ্রুপের সমীকরণ জমে উঠল। কারণ আফগানদের কাগজে-কলমে বিদায় নিশ্চিত হয়নি। শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে রশিদ-নবিরা হারিয়ে দিলে প্রভাব ফেলতে পারে রান রেট। সেক্ষেত্রে অবশ্য বাংলাদেশই এগিয়ে থাকবে। সাকিবদের সুপার ফোরে যাওয়াটা কেবল সময়ের অপেক্ষা।

বিশাল লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ে অবশ্য ভীতির ছাপ ছিল না। ব্যাটিং স্বর্গে দাঁড়িয়ে ম্যাচজুড়ে কেবল হারের ব্যবধান কমাতেই লড়াই করেছে তারা। হাফসেঞ্চুরি করেছেন ওপেনার ইব্রাহিম জাদ্রান ও অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শাহিদি। এই দুজনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় একটা পর্যায়ে অবশ্য অবিশ্বাস্য কিছুর আশায় ছিল আফগানরা।

কারণ ৩৬ ওভারে তিন উইকেটে ১৯৩ রান পর্যন্ত তুলেছিল আফগানিস্তান। এরপর তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম ঝড়। সেই ঝড়ে এলোমেলো আফগানরা। আড়াই শ’র আগেই তাদের গুঁড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ৭৫ রান করেন ইব্রাহিম। ৫১ রানে ফেরেন হাসমতউল্লাহ। এ ছাড়া রহমত শাহ ৩৩ ও রশিদ খান ২৪ রানে আউট হন।

৪৪ রানে চার উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। ৩৬ রানে তিনটি শিকার শরিফুলের। এ ছাড়া হাসান মাহমুদ ও মিরাজ একটি করে উইকেট নেন। মিরাজ অবশ্য ব্যাটিংয়েও বড় অবদান রেখেছেন। হাতের ইনজুরি নিয়ে উঠে যাওয়ার আগে সেঞ্চুরি করেন এই অলরাউন্ডার। পাঁচ বছর পর ওপেনিংয়ে নেমে বাজিমাত করেন মিরাজ। করেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক।

বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুর জুটিটা ছিল আশা জাগানিয়া। মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও মিরাজ গড়েন ৬০ রান যোগ করেন। ২৮ রানে নাঈমের আউটে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। তাওহিদ হৃদয় রানের খাতা খুলতে পারেননি। পরে জোড়া ধাক্কা সামাল দেন মিরাজ-শান্ত। তৃতীয় উইকেটে ১৯৪* রানের রেকর্ড জুটি গড়েন দুজন মিলে।

যা বিদেশের মাটিতে তৃতীয় উইকেটে দলের সর্বোচ্চ। আর সবমিলিয়ে ষষ্ঠ সেরা জুটি। জুটি গড়ার পথে দুজনই করেছেন সেঞ্চুরি। মিরাজ অসুস্থ হয়ে সাজঘরে ফিরে যান। শান্ত পড়েন রান আউটের ফাঁদে। ১১৯ বলে ১১২ রান করেন মিরাজ। সাতটি চার ও তিন ছক্কায় ইনিংস সাজান তিনি। ১০৫ বলে ১০৪ রানে ফেরেন শান্ত। তার ইনিংসে ছিল নয়টি চার ও দুটি ছক্কার মার। ওয়ানডেতে এটা শান্তরও দ্বিতীয় শতক।

কেবল শান্ত নন, মুশফিকুর রহিম, শামীম হোসেনও রান আউট হয়েছেন। মুশি ১৫ বলে ২৫ রান করেন। ছয় বলে ১১ রানে ফেরেন শামীম। শেষ দিকে ১৮ বলে ৩২ রানের হার না মানা ক্যামিও ইনিংস খেলেন সাকিব। আফগানদের পক্ষে একটি করে উইকেট নেন মুজিব উর রহমান ও গুলবাদিন নাইব। কিন্তু শান্ত-মিরাজ-সাকিব ঝড়ের সামনে স্রেফ উড়ে গেছেন তারা।