আফ্রিকায় মহাবিপাকে ফ্রান্স
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউরোপের দেশ ফ্রান্স। অথচ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের একের পর এক অভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছে ম্যাক্রোঁর দেশ। এসব দেশের শাসকবর্গ ফ্রান্সের স্বার্থ রক্ষা করে দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল। কিন্তু অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্রান্সপন্থী এসব শাসককে ক্ষমতাচ্যুত করা হচ্ছে। ফলে নিজেদের দীর্ঘদিনের গড়া সাম্রাজ্য ভেঙে যাওয়ার চিন্তায় পড়েছে ফ্রান্স।
গ্যাবনে অভ্যুত্থানের ঘোষণা
আফ্রিকায় সর্বশেষ অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে মধ্য আফ্রিকার দেশ গ্যাবনে। সেখানে ৫৪ বছর ধরে দেশ শাসন করে আসছিল বঙ্গো পরিবার। গত সপ্তাহের নির্বাচনে আবারও জয়ী হয়ে আরেক দফা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছিলেন দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আলি বঙ্গো। কিন্তু সেখানকার সামরিক বাহিনী নির্বাচনের ফল বাতিল করে আলি বঙ্গোকে গৃহবন্দি করে। দেশটির শীর্ষ নেতা হিসেবে এখন দায়িত্ব পালন করছেন জেনারেল ব্রিস ওলিগুই এনগুয়েমা।
মধ্য আফ্রিকার দেশ গ্যাবন নামে স্বাধীন হলেও সেখানে প্রাধান্য পেত ফরাসি স্বার্থই। লোহা, ম্যাঙ্গানিজ, হীরা, টাইটেনিয়ামের মতো বহুমূল্য খনিজ সম্পদের দেশ গ্যাবন থেকে নিজেদের ইচ্ছেমতো সম্পদ তুলে নিয়েছে ফ্রান্স। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৬০-১৯৯৯ পর্যন্ত এই ৪০ বছরে দেশটি থেকে ২৮ হাজার টন ইউরেনিয়াম তুলে নিয়েছিল ফ্রান্স। পরবর্তী সময়েও একই ধারা বজায় থাকে সেখানে।
আফ্রিকায় ফ্রান্সের প্রভাব
অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আলি বঙ্গো এবং তার পিতা ওমর বঙ্গো ছিলেন পুরোপুরি ফ্রান্সপন্থী। তাদের ৫৪ বছরের শাসনামলে ফ্রান্সের সঙ্গে ছিল খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আলি বঙ্গোর নেতৃত্বাধীন গ্যাবন ছিল আফ্রিকায় ফ্রান্সের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র। তাই ফ্রান্সের চাহিদামতোই চলতো গ্যাবনের রাজনীতির হালচাল।
সেই গ্যাবনে সামরিক অভ্যুত্থানে ফ্রান্সের মাথায় বাজ পড়েছে। কারণ একে তো এ অভ্যুত্থান সরাসরি ফ্রান্সের অর্থনীতি ও সামরিক স্বার্থের ওপর আঘাত হানছে। তার ওপর আফ্রিকার দেশগুলোতে ইদানিং যে হারে অভ্যুত্থান হচ্ছে, তা আগামীতে আরও কিছু দেশে অভ্যুত্থানে প্ররোচণা দিতে পারে। আর তাতে আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর ফ্রান্সের বাঁধন ধীরে ধীরে ঢিল হয়ে যাচ্ছে। এতে রাজনৈতিক প্রভাবের পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রভাবও কম নয়।
আঞ্চলিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গ্যাবনের অভ্যুত্থান এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন পুরো অঞ্চলে ফরাসিবিরোধী মনোভাব তীব্র হয়ে উঠছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে অভ্যুত্থান হওয়া দেশে ফরাসি কোম্পানিগুলোর কাজ বিঘ্নিত হবে। এমনকি অনেক দেশ থেকে ফরাসি কোম্পানিগুলো নিজেদের গুটিয়ে নিয়ে আসতে বাধ্য হবে।
মধ্য আফ্রিকার দেশ গ্যাবনের অভ্যুত্থানের আগে পশ্চিম আফ্রিকার কয়েকটি দেশেও হুমকির মুখে পড়ে ঔপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্সের ভিত। ২০২০ সালে মালিতে এবং ২০২১ ও ২০২২ সালে বুরকিনা ফাসোতে পরপর দুই দফা সামরিক অভ্যুত্থান হয়। সর্বশেষ অভ্যুত্থান হয় নাইজারে। সেখানে প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজুমকে হটিয়ে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। মোহাম্মদ বাজুমও ফ্রান্সের পরম ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
নাইজারের জান্তাবাহিনী ফ্রান্সের বিরুদ্ধে এতটাই ক্ষিপ্ত ছিল যে, প্রথমেই তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। এমনকি ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তারা নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই নির্দেশ পালিত না হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে দেশ থেকে বের করে দিতে পুলিশকে নির্দেশ দেয় নাইজারের জান্তা।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.