জি-২০ সম্মেলনে বানরের জন্য বিশেষ আয়োজন!

ভারতের রাজধানী নয়দিল্লিতে আর কয়েকদিন পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বাঘা বাঘা নেতারা আসছেন ভারতে। তাদের জন্য রাখতে হচ্ছে বিশেষ আয়োজন। তবে এর মধ্যে ভারতের চিন্তা দেশের একটি বিশেষ প্রজাতিকে নিয়ে। না চাইলেও এ সম্মেলন উপলক্ষে তাদের জন্য করতে হচ্ছে বিশেষ আয়োজন।

হনুমানের কাটআউট

৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে বসবে জি-২০ সম্মেলনের শীর্ষ আসর। সে সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁসহ বহু রথী-মহারথীর। তাদের নিরাপত্তায় যাতে কোনো ত্রুটি না থাকে সে জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে ভারতের প্রশাসন। এমনকি সম্মেলন চলাকালে দিল্লিতে তিন দিনব্যাপী সাধারণ ছুটিরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে মানুষ ঠেকানোর পরিকল্পনা আপাতত সফল বলেই মনে করছেন আয়োজকরা। তবে তাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দিল্লির বানর সম্প্রদায়।

দিল্লি প্রশাসন আশঙ্কা করছে, অতিথিদের বহরে অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে বানরকূল। কারণ সম্প্রতি সেখানে বানরের উৎপাত অনেকখানি বেড়ে গেছে। যখন তখন মানুষের ওপর হামলাও চালাচ্ছে। বিশ্বনেতাদের উপস্থিতিতে যেন এ ধরনের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে না হয়, সে জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে দিল্লি প্রশাসন।

দিল্লিতে বেড়েছে বানরের উৎপাত

এরই মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে হনুমানের ছবি সংবলিত কিছু কাটআউট। বানর মূলত ড্যামকেয়ার হলেও হনুমানকে ভয় পায়। তাই তাদের ঠেকাতে জ্যান্ত হনুমানের ব্যবস্থা না করা গেলেও বিভিন্ন এলাকায় রাখা হয়েছে হনুমানের ছবি। দিল্লি প্রশাসন মনে করছে, এর মাধ্যমে বানরের উপদ্রব রোধ করা সম্ভব হবে।

দিল্লির মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সতীশ উপাধ্যায় বলেন, আপাতত কিছু এলাকায় হনুমানের কাটআউট লাগানো হয়েছে। এ কৌশল সফল হলে রাজধানীর অন্যান্য এলাকায়ও এ ব্যবস্থা করা হবে।

দিল্লি বনবিভাগের উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সর্দার প্যাটেল মার্গ বরাবর সেন্ট্রাল রিজের সীমানায় হনুমানের কাটআউটগুলো স্থাপন করা হয়েছে। নিয়মিতভাবে এগুলোর জায়গা পরিবর্তন করা হবে যেন বানররা এগুলোকে আসল হনুমান বলেই মনে করে।

বন বিভাগ বলছে, বানরের উপদ্রব কমাতে উত্তরপ্রদেশের লখনৌতে হনুমানের এ ধরনের কাটআউট ব্যবহার করা হয়েছিল। এতে বেশ কাজ হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে দিল্লিতে সেই কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে।

তবে এতেই দিল্লি প্রশাসন পুরোপুরি ভরসা করে বসে থাকেনি। যদি এটি কার্যকর না হয়, তাহলেও যেন বানর উৎপাত করতে না পারে, সে জন্য মোতায়েন করা হয়েছে ৪০ জন ‘মানকিম্যান’। তারা বানরের ডাক যেমন নকল করতে পারে, তেমনি হনুমানের ডাকও নকল করতে পারে। এ কৌশলও প্রয়োগ করে দেখা হবে বানরের ওপর। অন্যদিকে বানরগুলো যেন জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে না ঢুকে সে জন্য আশপাশের জঙ্গলগুলোতে বানরের জন্য পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থাও করেছে দিল্লি প্রশাসন ও বন বিভাগ।