নারী-শিশুদের কোরআনও শেখান নাসার এই বিজ্ঞানী

মিশরীয় বংশোদ্ভূত ড. তাহানি আমের একজন মহাকাশ বিজ্ঞানী। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আর্থ সায়েন্সেস বিভাগের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এত বড় দায়িত্ব পালনের পরও সুযোগ পেলেই তিনি নারী ও শিশুদের কোরআন শেখান, আরবি ভাষা শেখান।

ড. তাহানি আমের

বাবার অনুপ্রেরণায় বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন তাহানি। ১৯৮৩ সালে বিয়ের পর মাত্র ১৭ বছর বয়সে আমেরিকায় পাড়ি জমান তিনি। তবে তার পড়াশোনা থেমে থাকেনি। যান্ত্রিক প্রকৌশলে স্নাতক এবং মহাকাশ প্রকৌশলে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পিএইচডি করেন ভার্জিনিয়ার ওল্ড ডোমিনিয়ন ইউনিভার্সিটি থেকে। নাসায় কাজ করতে শুরু করেন ১৯৯২ সালে।

একজন মুসলিম নারী হিসেবে তাহানি বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণায় কাজ করছেন তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে। সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যাথমেটিকসে মুসলিম নারীসহ সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছেন তিনি। এরই ফলস্বরূপ ২০১৪ সালে নাসার পক্ষ থেকে পাবলিক সার্ভিস পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

পুরস্কার নিচ্ছেন ড. তাহানি আমের

কর্মক্ষেত্রে তাহানি হিজাব পরেই দায়িত্ব পালন করেন। তবে এ নিয়ে তার মিশ্র অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি বলেন, নাসায় এর আগে অনেক মুসলিম নারী-পুরুষ কাজ করেছেন। কিন্তু কাউকে হিজাব পরতে দেখা যায়নি। কারণ এখানে হিজাব সবার পছন্দের নয়। তিনি মন্তব্য করেন, একজন হিজাবি কর্মী হিসেবে নানা ধরনের অনুভূতি অনুভব করি। তবে চাকরিজীবনে এর জন্য কখনও বিপদের আশঙ্কা করিনি। আমি মনে করি, হিজাব পরা ইসলামি শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। আর সবসময় আমি সে ধর্মীয় নির্দেশনা মেনে চলেছি।

তবে চাকরি ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই তার সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় বলে তিনি মানতে রাজি নন। তিনি বলেন, প্রত্যেক মুসলিম নারীর কিছু সামাজিক ভূমিকা রয়েছে। একজন শিক্ষিত মুসলিম নারী হিসেবে আমারও বেশ কিছু কর্তব্য রয়েছে। তাই প্রতি সপ্তাহে ভার্জিনিয়ার ইসলামিক সেন্টার অব হ্যাম্পটন মসজিদে শিশু ও নারীদের কুরআন ও আরবি শিক্ষা দিই। পাশাপাশি বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের মধ্যে ইসলামের শিক্ষা প্রসারেও কাজ করি। সমাজের বিভিন্ন স্তরের সদস্যদের মধ্যে সুদৃঢ় বন্ধন গড়ে তুলতে এ কার্যক্রম বেশ সহায়তা করে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে ইসলামের সৌন্দর্যও তুলে ধরেন ড. তাহানি আমের।