পাকিস্তানের শ্বাসরুদ্ধকর জয়

ক্রিকেটকে বলা হয় গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। সেটি প্রমাণ হল আবারও। আফগানিস্তানের দেওয়া ৩০১ রানের জবাবে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ১ উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর জয় তুলে নিয়েছে পাকিস্তান।

গুরবাজের অনবদ্য ইনিংস ছাপিয়ে পাকিস্তানের শ্বাসরুদ্ধকর জয়

শ্রীলঙ্কার মাহিন্দা রাজাপাকসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। সিরিজে ফেরার মিশনে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক হাসমাতুল্লাহ শাহিদী। শহিদীর সিদ্ধান্তে ওপেনিংয়ে আসেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। প্রথম ম্যাচের ব্যর্থতা ভুলে দলকে দারুণ শুরু এনে দেন ওপেনাররা। পাওয়ার প্লে শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৪৮ রান।

সেখান থেকে পাকিস্তানি বোলারদের হাতাশায় নিমজ্জিত করেন গুরবাজ ও জাদরান। দুই জনের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ওপেনিং জুটি শতক থেকে দেড়শো, অতঃপর ছাড়িয়ে যায় দুইশো রানে। শাহীন আফ্রিদি-হারিস রউফরা এদিন দিশেহারা হয়ে পড়েন দুই আফগান ওপেনারের কাছে। শেষ পর্যন্ত দলীয় ২২৭ রানে প্রথম সাফল্য পায় পাকিস্তান। ইব্রাহিম ৮০ রানে ফিরলেও অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ততক্ষণে সেঞ্চুরি তুলে নেন গুরবাজ। পাকিস্তানের বিপক্ষে পাওয়া প্রথম সেঞ্চুরিকে রূপ দেন দেড়শোতে। এরপর ১৫১ রানে গুরবাজ ফিরলে খুব বেশিদূর এগোতে পারেনি দলটি। ৫০ ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৩০০ রান। পাকিস্তানের বোলারদের পক্ষে আফ্রিদি ২টি, নাসিম শাহ ও ওসামা মির ১টি করে উইকেট শিকার করেন।

আফগানিস্তানের দেওয়া ৩০১ রানের লক্ষ্যে ওপেনিংয়ে আসেন ইমাম-উল হক ও ফখর জামান। বড় লক্ষ্যে পাকিস্তানের শুরুটা হয় উড়ন্ত। দুই অভিজ্ঞ ওপেনারের ব্যাটে দলীয় নবম ওভারে দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে পাকিস্তান। কিন্তু এরপরই পাকিস্তান শিবিরে আঘাত হানেন ফজলহক ফারুকী, ফখর জামান ফিরে যান ব্যক্তিগত ৩০ রানে। দলীয় ৫২ রানে ফখর ফিরলে ইমাম-উল হককে নিয়ে জুটি বাঁধেন বাবর আজম। দু'জনের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। দু'জনই তুলে নেন ফিফটি। কিন্তু ফিফটির পর হতাশ করেন বাবর, ফিরে যান ৫৩ রানে। দলীয় ১৭০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় পাকিস্তান।

বাবরের বিদায়ে বদলে যায় দৃশ্যপট। পাকিস্তানের দেখা মেলে আনপ্রেডিক্টেবল হিসেবে। দলীয় ১৭০ রানে ২ উইকেট হারানো দলটি ২১১ রানেই হারায় ৬ উইকেট। সেখান থেকে দলকে রক্ষার দায়িত্ব নেন ইফতেখার আহমেদ ও শাদাব খান। দুইজনের ব্যাটে ম্যাচে টিকে থাকে পাকিস্তান। কিন্তু দলীয় ২৫৮ রানে ইফতেখার আউট হলে পাকিস্তানের সামনে জয়ের সমীকরণ দাঁড়ায় ২২ বলে ৪৩ রান। সেখান থেকে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখান শাদাব খান।

শেষ ৬ বলে সমীকরণ দাঁড়ায় ১১ রানের। সেখানে ফারুকীর বুদ্ধিদীপ্ত ম্যানকাডে (নন স্ট্রাইক প্রান্তে) রান আউটে কাটা পড়েন শাদাব। শাদাব আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেও নাসিম শাহ ও হারিস রউফের অসাধারণ ফিনিশিংয়ে ১ উইকেটের জয় পায় পাকিস্তান। ম্যাচে ৯১ রানে আসে ইমাম-উল হকের ব্যাটে। এই জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করল পাকিস্তান।