'গোপনে' আসাদের চাচার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

সুইজারল্যান্ডের একটি আদালত গত বছর ১৯৮০ এর দশকে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের দায়ে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের চাচার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দিয়েছিল। ১৬ আগস্ট, বুধবার প্রকাশিত এক রায় থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। খবর এএফপি।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ

সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল ক্রিমিনাল কোর্ট দেশটির ফেডারেল ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস অ্যান্ড পুলিশকে (এফডিজেপি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছিল। এই ঘটনার এক বছর পর এটি প্রকাশ করা হয়।

সুইস বার্তা সংস্থা কিস্টোন-এটিএস জানিয়েছে, রিফাত আল আসাদ গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য যেকোনো ব্যবস্থা নিতে পারেন। এই বিবেচনায় সুইস অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এই রায় গোপন রাখতে বলেছিল।

অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ২০২১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের ৮৫ বছর বয়সী চাচাকে গ্রেপ্তারের জন্য একটি আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির অনুরোধ করেছিল। তবে সুইস বিচার মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, তাকে আদালতে অভিযুক্ত করার এখতিয়ার সুইজারল্যান্ডের নেই।

আসাদের চাচার জন্য আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে সুইজারল্যান্ড

সুইস বিচার মন্ত্রণালয় যুক্তি দিয়ে বলেছিল, রিফাত আল আসাদ সুইজারল্যান্ডের নাগরিক নন। তিনি দেশটিতে বসবাস করছেন না এবং সিরিয়ার হামা শহরে ১৯৮২ সালের গণহত্যার শিকারদের মধ্যে কোনো সুইস নাগরিক ছিল না। ফলে তার বিরুদ্ধে সুইস আদালতে কোনো অভিযোগ করা যাবে না।

তবে সুইস আদালত এই যুক্তি গ্রহণ করেনি। আদালত জানিয়েছে, ২০১৩ সালে যখন প্রসিকিউটররা রিফাত আল আসাদের বিরুদ্ধে প্রথম তদন্ত শুরু করেছিল, তখন তিনি জেনেভা হোটেলে অবস্থান করছিলেন। আদালতের মতে, আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিসহ কথিত যুদ্ধাপরাধের জন্য তাকে অভিযুক্ত করতে সুইজারল্যান্ডে তার এই উপস্থিতিই যথেষ্ট ছিল।

এক দশক আগে ট্রায়াল ইন্টারন্যাশনাল রিফাত আল আসাদের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ দায়ের করেছিল। এই মানবাধিকার গোষ্ঠীটি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কাজ করে এবং অভিযুক্ত আন্তর্জাতিক অপরাধীদের বিচারের জন্য সুইজারল্যান্ডকে চাপ দেয়।

ট্রায়াল জানিয়েছে, ১৯৮২ সালে হামা বিদ্রোহ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। সে সময় হাজার হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়। তিনি সেই সময়ে সিরিয়ান প্রতিরক্ষা বাহিনীর কমান্ডে ছিলেন। তাকে হামা’র কসাই নামে ডাকা হতো।

উল্লেখ্য, রিফাত আল আসাদ সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফেজ আল আসাদের ছোট ভাই। ৩৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর ২০২১ সালে তিনি সিরিয়ায় ফিরে আসেন। ফ্রান্স এবং স্পেনে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা রয়েছে। ১৯৮৪ সালে তার ভাইকে ক্ষমতাচ্যুত করার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পরে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন তিনি।