ইমরানকে পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাস থেকে মুছে দিলো পিসিবি!

আইসিসির ওয়ানডে বিশ্বকাপের ইতিহাসে পাকিস্তান একবারই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। আর সে সময় দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইমরান খান। পরবর্তী সময়ে যিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীও হয়েছিলেন। কিন্তু সেই ইমরান খানকে দেশের ক্রিকেট ইতিহাস থেকেই মুছে ফেলছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড পিসিবি।

ইমরান খানকে বাদ দিয়েই ইতিহাস লিখছে পিসিবি

ইমরান খানকে পাকিস্তান ক্রিকেটের সব সময়ের সেরাদের একজন মনে করা হয়। দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলে ১৯৯২ সালে দেশকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন তিনি। টুর্নামেন্টের এক পর্যায়ে তো তারা বাদ পড়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছিল পাকিস্তান। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঘরে ফেরা সম্ভব হয়েছিল ইমরান খানের নেতৃত্বেই। পিসিবি এক ভিডিওচিত্রে দেখা মিলল না সেই ইমরানেরই।

ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার বেশ কিছুদিন পর ইমরান খান তেহরিক-ই-ইনসাফ পাকিস্তান (পিটিআই) নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠ হিসেবে প্রচার চালিয়ে ২০১৮ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে জিতে যায় তার দল। বিশ্বে প্রথম কোনো ক্রিকেটার হিসেবে প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব নেন তিনি। গত বছরের এপ্রিলে এক অনাস্থা ভোটে তিনি পদচ্যুত হন। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বিক্ষোভ, সমাবেশ, র‌্যালিতে নিজের জনপ্রিয়তা প্রমাণে সচেষ্ট ছিলেন ইমরান খান।

চরম সমালোচনার মুখে পড়েছে পিসিবি

তবে ইমরানের সঙ্গে সরকার ও সেনাবাহিনীর দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে কয়েক মাস আগে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করলে। তার দলের সমর্থকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বেশকিছু সেনা স্থাপনাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, যা সহজভাবে নেয়নি দেশটির সামরিক বাহিনী। তারপর থেকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তার খবর প্রকাশে মৌখিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফলে তার সম্পর্কে খবর প্রায় নাই হয়ে যায় দেশটির সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এবার সে পথেই যেন হাঁটল পিসিবি। গত ১৪ আগস্ট নিজেদের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব ক্রিকেটারদের সম্মান জানিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করে পিসিবি। সেখানে পাকিস্তানের হয়ে খেলা প্রায় প্রত্যেক ক্রিকেটারের উপস্থিতি ছ। তবে দেখা মেলেনি বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানের।

বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানজুড়ে বড় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তার বিরুদ্ধে বেশকিছু মামলা আছে এবং তিনি কারাদণ্ডও খাটছেন। কিন্তু এরপরও তিনি পাকিস্তান ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। ফলে তাকে বাদ দিয়ে অন্যদের শ্রদ্ধা জানানোয় হতাশ হয়েছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। তারা মন্তব্য করছেন, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের এই পোস্টটি রাজনৈতিক প্রভাবে প্রভাবিত হওয়ায় জায়গা পাননি ইমরান।