তলবে যা বললেন রকিবুল; সুজন বলছেন, ভয় পায় ক্রিকেটাররা!

চন্ডিকা হাথুরেসিংহ ও বিসিবির বিরুদ্ধে বেফাঁস মন্তব্য করায় বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসানকে তলব করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, বিসিবি। জবাবে রকিবুল জানিয়েছেন, বিসিবির সঙ্গে ইনফরমালি আলাপ হয়েছে তার। একই দিনে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অবসর প্রসঙ্গে কথা বলেছেন বিসিবির পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন।

রকিবুল হাসান (বামে) মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মাশরাফি বিন মুর্তজা (মাঝে), বেন স্টোকস (ডানে)

এশিয়া কাপের আগে বাংলাদেশ ক্রিকেটে উত্তাল ঢেউ! সেটি অবশ্য মাঠের বাইরে। এশিয়া কাপকে ঘিরে বাংলাদেশ যখন নতুন পরিকল্পনায় ব্যস্ত, তখনই বিসিবিকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ বিসিবির কর্মকর্তা রকিবুল হাসান। রকিবুলের এমন কর্মকাণ্ডে বিব্রত বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। কেন বিসিবিকে নিয়ে এমন মন্তব্য সেটি জানতেই মূলত তলব করা হয় রকিবুলকে।

আজ গণমাধ্যমের সামনে এ বিষয়ে কথা বলেন বিসিবির প্রধান ম্যাচ রেফারি রকিবুল। তিনি বলেন, ‘টকশোতে কথা বলা নিয়ে ইনফরমালি আলাপ হয়েছে বিসিবির সঙ্গে। আমি আমার ব্যাখ্যা দিয়েছি। আমি ওদের বলেছি, ওখানে (টকশো) তথ্য-উপাত্ত কিছু ভুল আছে। এছাড়া সবকিছু ঠিক আছে, এই তো।’

বিসিবি সভাপতির বিব্রত হবার বিষয়টিকে ভুলবোঝাবুঝি বলে দাবি করছেন রকিবুল। আলোচিত বিষয় নিয়ে বিসিবিকে নিজের কথাগুলো বুঝিয়ে বলেছেন বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে রকিবুল বলেন, ‘এটি মূলত আমার ও বিসিবির মধ্যে আলোচনা। আমি তো বিসিবিতে চাকরি করি। কিছু ভুলবোঝাবুঝি হলে বিষয়টি কঠিন হয়ে যায়। এগুলো বুঝিয়ে দেওয়া আমারই দায়িত্ব। আমি বিসিবিতে আমার কথাগুলো বলেছি, তারাও বিষয়টি আলোচনা করেছে। আশা করি সবকিছু (তিক্ততা) দূর হয়েছে।’

মূলত এশিয়া কাপের ১৭ সদস্যের স্কোয়াডে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জায়গা না হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছিলেন রকিবুল। রিয়াদ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন বিসিবির পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনও। তিনি জানিয়েছেন, ভালো করলে আবারও জাতীয় দলে দেখা যেতে পারে রিয়াদকে। যদিও ক্রিকেটপাড়ায় বলাবলি হচ্ছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শেষ দেখে ফেলেছেন রিয়াদ। সুজন এমনটা না ভাবলেও সঠিক সময়ে ক্রিকেটারদের অবসর না যাওয়ার বিষয়টিকে ‘ভয়’ বলে উল্লেখ করেছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটে নজর দিলে দেখা যায়, ক্যারিয়ারের পিক টাইম বা পারফর্ম করা অবস্থায় ক্রিকেটকে বিদায় বলছেন অনেক নামিদামি ক্রিকেটার। এ তালিকায় রয়েছে শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা, প্রোটিয়া ব্যাটার এবি ডি ভিলিয়ার্স, ইংল্যান্ডের পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড, ইংলিশ ব্যাটার অ্যালিস্টার কুকসহ বেশকিছু নাম।

মাঠ থেকে বিদায় নিয়েছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। মূলত তরুণ ক্রিকেটারদের সুযোগ দিতেই বিদায় নিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে সুজন বলেন, ‘আমি তো মাঠ থেকেই বিদায় নিয়েছি৷ আমি বুঝতে পেরেছি আমার সময় শেষ, তরুণরা এসেছে। আমি যদি না ছাড়ি তাহলে নতুন ক্রিকেটার কীভাবে আসবে সেটিও বড় কথা।’

সবকিছুরই শেষ আছে। কিন্তু সঠিক সময় কোনটা সেটি বেছে নেওয়া অনেক কঠিন। এমন সিদ্ধান্ত ক্রিকেটারদেরই নিতে হবে। বর্তমান সময়ে ক্রিকেটে  টাকার ছড়াছড়ি হলেও তাদের সময়ে এত টাকা না পেলেও ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা অনেক বেশি ছিল বলে জানান সুজন। এ বিষয়ে সুজন বলেন, ‘তো এই সিদ্ধান্ত (অবসর) খেলোয়াড়দের নিতে হবে। কোনটা সঠিক সময়, এটা বের করা খুব কঠিন। আমিও এমন মুহূর্তে ছিলাম। আমরা রিয়াদদের মতো এত পেশাদার ছিলাম না। এত টাকা পেতাম না। আমরা খুব অল্প টাকায় খেলেছিলাম। ওইটা তখন আমাদের ভালোবাসা ছিল।’

শুধু সুজন নন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চিন্তা করে ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, হাবিবুল বাশার, আকরাম খানরাও। কিন্তু সময় শেষ জেনেও ক্রিকেটকে বিদায় বলছেন না অনেক ক্রিকেটার। মূলত এটাকে ভয় হিসেবে দেখছেন সুজন। তিনি বলেন, ‘সে সময় আমাদের ক্রিকেট এতটা পেশাদার ছিল না। ক্রিকেটের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ছিল বলে ছাড়তে পেরেছি। আমি জানি না কেন আমাদের এই প্রজন্মের ছেলেরা এটা ছাড়তে চায় না, কেন ভয় পায়। তবে একটা সময় ছাড়তে হবে। আকরাম ভাই ছেড়েছেন, বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান ছিল নান্নু ভাই, হাবিবুল বাশারকে এক সময়কার মিস্টার ফিফটি বলা হতো, বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন্সি করেও রান করেছে অনেক। তারা সবাই ছেড়েছে।’

বর্তমান সময়ে ক্রিকেটপাড়ায় একটা রেওয়াজ শোনা যায়, অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের প্রাপ্য সম্মান দেয় না বিসিবি। যদিও মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম (টি-টোয়েন্টি), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদসহ বেশকিছু ক্রিকেটারদের জন্য বিদায়ী ম্যাচের আয়োজন করতে চেয়েছে বিসিবি।

আরও কিছু খবর

মাস সেরা ক্রিস ওকস: স্বপ্নের মতো অ্যাশেজ সিরিজ কাটিয়েছেন। পুরো সিরিজে বল হাতে ১৯ উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে সিরিজ ড্র'য়ে ভূমিকা রাখায় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির জুলাই মাসের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন ইংল্যান্ডের ক্রিস ওকস।

দুই দশক পর জিম্বাবুয়ে সফরে যাচ্ছে ইংল্যান্ড: দু'দল সবশেষ টেস্ট খেলেছে ২০০৩ সালের জুনে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৫ সালের মে মাসে একমাত্র টেস্ট খেলতে জিম্বাবুয়ে সফরে যাবে ইংল্যান্ড।

অবসর ভেঙে ফিরছেন স্টোকস: প্রায় এক বছর আগে আচমকাই ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলেছিলেন ইংল্যান্ডের তারকা ক্রিকেটার বেন স্টোকস। ওয়ানডে অধিনায়কের অনুরোধে আবারও ওয়ানডে ক্রিকেটে ফিরছেন স্টোকস। এমনটাই দাবি করেছেন ইংলিশ গণমাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ।’