সামরিক বাহিনীর সব নিয়োগকর্তাকে বরখাস্ত করলেন জেলেনস্কি

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যেখানে প্রচুর জনবল দরকার, সেখানে ঘুষ নিয়ে ‘লড়াইয়ের যোগ্য নয়’ এমন সার্টিফিকেট দিচ্ছিলেন সামরিক বাহিনীতে লোক নিয়োগের জন্য নিয়োজিত কর্মকর্তারা। বিষয়টিকে দেশদ্রোহিতার শামিল বলে উল্লেখ করে শুক্রবার (১১ আগস্ট) এ ধরনের সব নিয়োগকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন জেলেনস্কি। খবর রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান।

জেলেনস্কি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বরখাস্তের খবর জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন, সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে বৈঠকের পর সব আঞ্চলিক কমিশনারকে আমরা বরখাস্ত করছি। কারণ এই কাঠামোটি এমন সব মানুষের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়া উচিত, যারা জানেন- যুদ্ধটা প্রকৃতপক্ষে কী, আর যুদ্ধের এই সময় স্বার্থপরতা ও ঘুষ আদান-প্রদান কেন বড় ধরনের রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।

গত বছর রাশিয়া হামলা শুরুর প্রায় দেড় বছর ধরে তা মোকাবেলা করে যাচ্ছে ইউক্রেন। এ যুদ্ধে দেশটির অনেক এলাকা রুশ বাহিনীর দখলে চলে গেছে। সেগুলো মুক্ত করতে দুই মাসের বেশি সময় ধরে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে কিয়েভ। তবে দীর্ঘদিনের যুদ্ধে অনেক হতাহতের কারণে সামরিক বাহিনীতে ইউক্রেনীয় নাগরিকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

ইউক্রেনের সেনা সদস্য

যুদ্ধের কারণে ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষদের দেশ ছাড়তে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর পরিধি ১৬-১৭ বয়স পর্যন্ত বিস্তৃত করার চিন্তা-ভাবনা চলছে।

এ অবস্থায় যুদ্ধে যোগ দিতে অনিচ্ছুক লোকদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে তাদের ‘লড়াইয়ের যোগ্য নয়’ এমন সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছিল। সম্প্রতি আঞ্চলিক নিয়োগকেন্দ্র পরিদর্শনের সময় বিষয়টি নজরে আসে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, কেউ নগদ আর কেউ ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে দুর্নীতি করছে। পরে তাদের মধ্যে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে ১১২টি ফৌজদারি মামলা করা হয়।

এর আগেও রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালেই ইউক্রেনে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। দুর্নীতির এসব অভিযোগে বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। আবার অনেককে বরখাস্তও করা হয়। মূলত দুর্নীতি নিয়ে পশ্চিমাদের প্রবল সমালোচনায় মুখে পড়েছে কিয়েভ। এমনকি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থায় যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে এই দুর্নীতি অন্যতম প্রধান বাঁধা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এসব কারণেই আঞ্চলিক কমিশনারদের বিরুদ্ধে এমন কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি একে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।