মেয়েদের খোলামেলা পোশাকের কারণেই থার্টি ফার্স্টে যৌন হয়রানি!

ইংরেজি ২০১৭ সালকে বরণ করে নেয়ার সময় ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন সেখানে জড়ো হওয়া নারীরা। এরপর সেই নারীরা যৌন নিগ্রহের জন্য অপরাধীদের বিচার দাবি করেন। এদিকে স্থানীয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারী নির্যাতনের বিভিন্ন ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় পর সেখানকার এক মন্ত্রী বলেছেন, 'মেয়েদের খোলামেলা পোশাকের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে।'

যৌন নিগ্রহের বিচার না করে পোশাককে দায়ী করে বক্তব্য দেয়ায় তোপের মুখে পড়েছেন কর্নাটক রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরামেশ্বরা। তিনি বলেন, 'বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে আসা তরুণীরা তাদের পোশাকের ব্যাপারে সচেতন ছিলেন না। খোলামেলা পোশাক পড়লেতো এই ধরনের ঘটনা ঘটবেই। আজকাল মেয়েরা শুধু পশ্চিমাদের মননে অনুসরণই করেন না, তাদের মতো পোশাকও পড়েন। এই ধরণের ছোট ছোট পোশাক পড়ার কারণেই বর্ষবরণে অংশ নিতে আসা নারীরা যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন।' মন্ত্রীর এহেন বক্তব্যে বেজায় চটেছেন ভারতের নারীরা।

তবে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের সেই রাতে নারী নিগ্রহের বেশকিছু হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে। ব্যাঙ্গালুরুর একটি পত্রিকায় ক্রন্দনরত কয়েকজন নারীর ছবি ছাপিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। নারীরা অভিযোগ করেছেন, অনুষ্ঠানে থাকা পুরুষরা তাদের সংবেদনশীল স্থানে হাত দিয়েছেন। নির্যাতনের শিকার হওয়া কোন নারী পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ করেননি। তবে পুলিশ প্রশাসন বেশকিছু ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনাটি তদন্ত করছে।

নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের প্রধান লালিথা কুমারা মানা গালাম বলেন, 'ঘটনার রহস্য উদঘাটন না করে মন্ত্রীর এমন বক্তব্য সত্যি দু:খজনক। এমন মন্তব্যের জন্য তাকে নারীদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।'

জানা গেছে, ২০১৭ সালের প্রথম দিনটি উদযাপন করতে ব্যাঙ্গালুরুর মহাত্মা গান্ধী এবং ব্রিগেড রোড এলাকায় প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষের সমাগম ঘটে। অথচ সেখানে মাত্র দেড় হাজার পুলিশ মোতায়েন ছিল। স্থানীয়রা বলছেন, ধারণ ক্ষমতার চাইতে অতিরিক্ত মানুষের জমায়েত হয় এখানে। ফলে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। নারী নির্যাতনের অসংখ্য ছবি এবং ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে।

ব্যাঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার প্রাভীন সুদ জানান, আমরা প্রতিটি ভিডিও ফুটেজ এবং ছবি দেখে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। কারো সংশ্লিষ্টতা পেলে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি সাধারণ জনগণের কারো কাছে এমন কোন তথ্য-প্রমাণ থাকলে সেটা পুলিশের কাছে সরবরাহ করার অনুরোধ জানান।