আপনি পড়ছেন

অর্থনীতির ধীর গতি, বেকারত্বের উচ্চ হার এবং করপোরেট কোম্পানিগুলোর ক্রমবর্ধমান ছাঁটাই চীনের তরুণ প্রজন্মের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করছে। শুধু প্রভাব বললে ভুল হবে, বলা যায় তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত অর্থাৎ বিয়ের সিদ্ধান্তও এসব নিয়ামক নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে বরং বিয়ে স্থগিত রাখছে, যা দেশটিতে বিয়ের হার রেকর্ড পরিমাণ নিম্ন হওয়ায় অবদান রেখেছে। খবর নিউ ইয়র্ক টাইমসের।

marriageছবি - সংগৃহীত

গ্রেস ঝাং চীনের একজন প্রযুক্তি কর্মী। বিয়ের ব্যাপারে এই নারী দীর্ঘদিন ধরে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। গত বছর সাংহাইয়ে লকডাউনের সময় তিনি এক জায়গায় অবরুদ্ধ অবস্থায় দুই মাস কাটান। আর যখন লকডাউন থেকে মুক্ত হন, তখন তার আশাবাদের অনুভূতি ম্লান হয়ে যায়।

ডিসেম্বরে চীন যখন পুনরায় কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ তুলে দিয়ে পুনরায় সবকিছু খুলে দেয় ঝাং ভেবেছিলেন অফিসে ফিরে কাজ করলে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পুনরুদ্ধারে তাকে সহায়তা করতে পারে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান ছাঁটাই তাকে বরং বিভ্রান্ত করেছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঝাং নামের এই তরুণীর একজন প্রেমিক আছে। এ ছাড়া তিনি তার বাবার কাছ থেকে প্রায়শই বিয়ে করে থিতু হওয়ার উপদেশ পান। তবে এসব সত্ত্বেও তার শিগগিরই বিয়ে করার কোনো পরিকল্পনা নেই।

তিনি বলেন, জীবনের এই ধরনের অস্থিরতা মানুষকে জীবনে নতুন পরিবর্তন আনতে আরও বেশি ভয় ধরিয়ে দেবে।

গত মাসে প্রকাশিত চীনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, টানা ৯ বছর ধরে দেশটিতে বিয়ের সংখ্যা কমেছে এবং এক দশকেরও কম সময়ের মধ্যে বিয়ের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। গত বছর প্রায় ৬.৮ মিলিয়ন দম্পতি বিয়ের জন্য নিবন্ধিত হয়েছে, যা ১৯৮৬ সালে রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বনিম্ন এবং ২০১৩ সালের ১৩.৫ মিলিয়ন থেকেও কম।
যদিও আগের বছরের তুলনায় চলতি বছর এখন পর্যন্ত বিয়ের সংখ্যা বেড়েছে। বছর শেষে বিয়ের সংখ্যা আরও বাড়বে। এই বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে এক বছরের আগের একই সময়ের তুলনায় ৪০ হাজার বেশি বিয়ে হয়েছে।

পরিসংখ্যানগুলি থেকে বোঝা যায়, চীনের তরুণরা গলাকাটা শিক্ষা ব্যবস্থায় নিজের সন্তানকে ফেলতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। শহরের নারীরা যেহেতু আর্থিকভাবে স্বাধীনতা ও শিক্ষায় নতুন মাত্রা অর্জন করেছে, তাই তাদের কাছে বিয়ের অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তা খুব বেশি নেই এখন। আর পুরুষরা বলছে, তারা বিয়ে করতে গিয়ে যে খরচ বহন করতে হয় তা করার সামর্থ্য রাখে না। এ সময় তারা ডেটিং শুরুর আগে একটি বাড়ি এবং একটি গাড়ির মালিক হওয়ার যে সাংস্কৃতিক চাপ রয়েছে দেশটিতে তারও উল্লেখ করেছেন।

গত তিন বছরে কোভিডকালীন অস্থিরতা এই চাপগুলিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। পরিবার গঠনের বিষয়ে অনেক তরুণ-তরুণীর প্রত্যাশাকে নতুন আকার দিয়েছে। এ ছাড়া দেশটি তার নেতা শি জিনপিংয়ের অধীনে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান কঠোরতায় পড়ছে- যার প্রভাবে বিবাহের হার কমতে পারে বলে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়।

অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো শিউজিয়ান পেং বলেন, তরুণরা যদি ভবিষ্যৎ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী না হয়, তাহলে তাদের জন্য থিতু হওয়া এবং বিয়ে করার বিষয়ে চিন্তা করা খুবই কঠিন।

চীনে অবিবাহিত দম্পতি বা অবিবাহিত ব্যক্তির সন্তান হওয়া খুব বিরল ব্যাপার। তাই বিয়ের হার কমে যাওয়ায় দেশটিতে জন্মহারও কমছে। গত বছর ১৯৬০ দশকের পর প্রথমবার জনসংখ্যা কমেছে। ১৯৬০ সালের গোড়ার দিকে দুর্ভিক্ষ হওয়ায় জনসংখ্যা কমেছিল।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.