দ. আফ্রিকা: পুতিনকে গ্রেপ্তার করলে তা হবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল

ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে গ্রেপ্তার করা হলে তা হবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দক্ষিণ আফ্রিকার আদালত থেকে প্রকাশিত নথিতে প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার এই মন্তব্য পাওয়া গেছে। খবর এএফপি।

পুতিন

জুন মাসে রামাফোসার স্বাক্ষরিত এই হলফনামা মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি ‘গোপনীয়’ হিসেবে চিহ্নিত থাকলেও আদালত নথিটি প্রকাশের ব্যাপারে সম্মতি দিলে তা প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়টি এমন সময়ে প্রকাশ্যে এলো, যখন পুতিনকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছে দেশটি। দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারবিরোধীরাও পুতিনকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছে।

আগামী মাসে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠেয় ব্রিকস সম্মেলনে যোগদানের জন্য সংস্থার অন্যতম সদস্যরাষ্ট্র রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় সমস্যায় পড়েছে দেশটি। কারণ আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে পুতিনকে গ্রেপ্তারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে দেশটির।

সিরিল রামাফোসা

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স দাবি করছে, পুতিন আসলে তাকে গ্রেপ্তার করে আইসিসির হাতে তুলে দেওয়া হোক। তবে আদালতে দাখিল করা এক হলফনামায় রামাফোসা দলটির এ আবেদনকে দায়িত্বজ্ঞানহীন হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, এমন কোনো প্রচেষ্টা চালালে হুমকির মুখে পড়বে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা। কারণ, রাশিয়া আগেই এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে জানিয়েছে, পুতিনকে গ্রেপ্তার করা হবে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর ঝুঁকি নেওয়া হবে আমাদের সংবিধানের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। দেশকে রক্ষার যে দায়িত্ব তার কাঁধে রয়েছে, এটি হবে তার বিপরীত।

সিরিল রামাফোসা আরও বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা আইসিসির নিয়মের অধীনে এ বিষয়ে একটি উপায় খুঁজে বের করতে চাইছে। পুতিনকে গ্রেপ্তার করা হলে তা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, শান্তি ও শৃঙ্খলার জন্য হুমকি হতে পারে।

পুতিন ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে এখনও রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, বরাবরের মতো তিনি এবারও ব্রিকস সম্মেলেন অংশ নেবেন। ব্রিকসের বর্তমান সভাপতি দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটির ডেপুটি প্রেসিডেন্ট পল মাশাটাইল স্থানীয় গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, সরকার পুতিনকে না আসার ব্যাপারে রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে এখন পর্যন্ত সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আইসিসি গত ১৭ মার্চ পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। অবশ্য আইসিসির এই পদক্ষেপকে পুরোপুরি অর্থহীন বলে আখ্যা দিয়েছে ক্রেমলিন।