ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের ভাষণ বয়কট

যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক দলীয় নারী কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমর জানিয়েছেন, তিনি কংগ্রেসে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের ভাষণ পর্ব বয়কট করবেন। ২০১৯ সালে কংগ্রেসের দুই মুসলিম নারী সদস্য রাশিদা তালাইব ও তাকে ইসরায়েলে প্রবেশে বাধা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি এ ঘোষণা দেন। খবর মিডলইস্টমনিটর।

আইজ্যাক হারজোগ ও ইলহান ওমর

ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ আগামী বুধবার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। পাশাপাশি হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও তার দেখা করার কথা রয়েছে।

ইলহান ওমর টুইটারে লেখেন, ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের ভাষণে আমার যোগ দেওয়ার কোনো ধরনের সম্ভাবনাই নেই। কারণ তার দেশ আমাকে তাদের দেশে নিষিদ্ধ করেছে, রাশিয়া তালাইবকে তার দাদিকে দেখতে যাওয়া থেকে বাধা দিয়েছে।

জেনিনে ইসরায়েলের হামলা

২০১৯ সালে মার্কিন কংগ্রেসের এই দুই মুসলিম নারী সদস্যকে ইসরায়েলে প্রবেশে বাধা দিয়েছিল দেশটির সরকার। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিশীল বিডিএস মুভমেন্টের প্রতি সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে তেলআবিব কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

ইলহান ওমর বলেন, ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট এমন এক সময়ে মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দেবেন, যখন দেশটি পরিচালনা করছে দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে ডানপন্থী সরকার। তিনি এমন এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসছেন, যখন তার সরকার ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্রগত ধারণাকে ধূলিস্যাৎ করার হুমকি দিচ্ছে, দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান এবং শান্তির কফিনে পেরেক ঠুকছে। তিনি টুইটারে ইসরায়েলি অতি-ডানপন্থী মন্ত্রীদের মন্তব্য এবং বিতর্কিত বিচারিক সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে চলমান বিতর্কের বিষয়টিও টুইটে উল্লেখ করেন।

মুসলিম একই কংগ্রেস সদস্য এ মাসের শুরুর দিকে ফিলিস্তিনের জেনিসে ইসরায়েলি হামলার কথা তুলে ধরে বলেন, এতে চার শিশুসহ ১২ ফিলিস্তিনি নিহত, ১২০ জন আহত হয়েছেন। সেখানকার ৮০ শতাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গত মাসে আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণ বয়কট করেছিলাম, কারণ ভারতে তার মানবাধিকার রেকর্ডের অবস্থা ভালো নয়। এ মাসে আমি ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের ভাষণ বয়কট করব।

গত কয়েক মাস ধরে অধিকৃত পশ্চিম তীরে, বিশেষ করে নাবলুম ও জেনিনে ইসরায়েলি অভিযানের সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব অভিযানে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে প্রচুর ফিলিস্তিনি নাগরিক হতাহত হচ্ছে। আবার অনেককে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ হত্যাকাণ্ডের ফলে এই বছর ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৯৮-এ পৌঁছেছে। গত বছরটিকে ২০১৫ সাল থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক বলে মনে করা হয়েছিল, কিন্তু এই বছরের ছয় মাসেই মৃতের সংখ্যা ২০২২ সালে মোট নিহতদের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে।