আগস্টে ক্ষমতা ছাড়বে শাহবাজের সরকার

চলতি বছরের আগস্টে অর্থাৎ আগামী মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে পাকিস্তানের বর্তমান ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে এ কথা বলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। খবর ডন।

শাহবাজ শরিফ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে পাকিস্তানের ৩০০ কোটি ডলারের চুক্তির একদিন পর প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানালেন। ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, গত বছরের এপ্রিলে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আগামী ১৪ আগস্ট এ সরকারের মেয়াদ শেষ হবে। এরপর আমরা এই দায়িত্ব তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ফিরিয়ে দেবো, যাতে দেশে একটি নির্বাচিত সরকার আসতে পারে।

তিনি বলেন, কোনোভাবেই সরকারের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হবে না। আমাদের মেয়াদ শেষ হওয়া মাত্রই আমরা সরে যাব। আর যখনই নির্বাচনের সময় হবে, নির্বাচন কমিশন তা ঘোষণা করবে।

পাকিস্তান পার্লামেন্ট

পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, জাতীয় ও দুটি প্রাদেশিক আইনসভা তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক দিন আগেই ভেঙে দেওয়া হতে পারে, যাতে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী প্রচারণার জন্য অতিরিক্ত ৩০ দিন সময় হাতে পায়।

পাকিস্তানের সংবিধানের ২২৪ অনুচ্ছেদের অধীনে, যদি কোনো বিধানসভা তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ভেঙে দেওয়া হয় তবে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর বিধানসভা ভেঙে দিলে নির্বাচন কমিশনকে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।

জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার মাত্র ১৫ মাসে গত চার বছরে সৃষ্ট ‘ধ্বংসস্তূপ’ পরিষ্কার করেছে। আমাদের এই সংক্ষিপ্ত সময়কাল ছিল হতাশার অন্ধকার থেকে আশার আলোর দিকে যাত্রা। সবকিছু হারানোর পর কিছু পাওয়ার সূচনা ছিল এটি। নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা থেকে উন্নয়নের দিকে ফিরে আসার যাত্রা ছিল এই কয়েকমাসের শাসনকাল।

তিনি বলেন, এ সময়ে আমাদের সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রত্যাবর্তন এবং মুদ্রাস্ফীতি, বন্যা ও বেকারত্বে জর্জরিত দেশকে স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছে। পূর্ববর্তী পিটিআই সরকার অর্থনীতি ও বৈদেশিক সম্পর্কসহ যেসব খাত ধ্বংস করে গেছে, সেগুলোতে শৃঙ্খলা ফিরিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জ ও ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও জোট সরকার স্বল্পতম সময়ে দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সফল হয়েছে। তিনি দাবি করেন, বিগত সরকার আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি থেকে সরে গিয়ে দেশকে খেলাপির দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। জোট সরকার সেই অবস্থান থেকে দেশকে সরিয়ে নিয়ে এসেছে এবং আইএমএফের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশকে পুনরুদ্ধার করছে।

পাকিস্তানের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি দিতে এগিয়ে আসায় পাক প্রধানমন্ত্রী চীনের প্রেসিডেন্ট, সৌদি যুবরাজ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এই সপ্তাহের শুরুতে, পাকিস্তান সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ১ বিলিয়ন এবং সৌদি আরব থেকে ২ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ সহায়তা পেয়েছে।