ন্যাটোতে যোগদান: সময়সীমা না পেয়ে ক্ষুব্ধ জেলেনস্কি

লিথুয়ানিয়ায় জোটের শীর্ষ সম্মেলনে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদের জন্য কোনো সময়সীমার কথা না বলায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, শীর্ষ সম্মেলনে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদের জন্য একটি সময়সীমার প্রস্তাব না দেওয়া হবে পুরোপুরি অযৌক্তিক একটি কাজ। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) তিনি এই মন্তব্য করেন। খবর রয়টার্স।

জেলেনস্কি

সর্বশেষ সদস্য ফিনল্যান্ডসহ ৩১টি সদস্য রাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে মঙ্গলবার লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়। জোটে ইউক্রেনের সদস্যপদের ব্যাপারে বলা হয়েছে, যখন সব সদস্য সম্মত হবে এবং শর্ত পূরণ করা হবে তখন আমরা ইউক্রেনকে জোটে যোগদানের আহ্বান জানাবো। তবে সময়সীমা বা শর্তের ব্যাপারে এ ঘোষণায় বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে জেলেনস্কি লেখেন, এটি নজিরবিহীন ও অযৌক্তিক একটি ব্যাপার, ন্যাটোতে যোগদানের জন্য কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। একই সঙ্গে ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানোর ক্ষেত্রেও ‘শর্ত’ সম্পর্কে অস্পষ্টতা রাখা হয়েছে, যা পুরোপুরি অযৌক্তিক।

ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ

তিনি বলেন, ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তা তৈরি করার অর্থ হচ্ছে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বিষয়ে দর কষাকষির সুযোগ উন্মুক্ত রাখা। অন্যদিকে রাশিয়ার জন্য এর অর্থ হলো- তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার জন্য সমর্থন পাওয়া। এ অনিশ্চয়তার বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেন, শীর্ষ সম্মেলনে আমি বিষয়টি খোলাখুলি আলোচনা করব।

এদিকে জেলেনস্কির সমালোচনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সদস্যের জন্য এগিয়ে যাওয়ার পথে এর থেকে দৃঢ় সমর্থনের বার্তা ন্যাটোর কাছ থেকে আর কখনও আসেনি। আগেও ন্যাটোতে যোগদানে কোনো সময়সীমা নির্ধারিত ছিল এবং সবসময়ই এটি শর্তযুক্তই ছিল।

মূলত ন্যাটোর যোগদানের ইস্যুকে কেন্দ্র করে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আক্রমণ চালায় রাশিয়া। এরপর বিভিন্ন সময়ে ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি চিন্তা করছে না। তবে পরে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আবেদন করলে ইউক্রেনও ন্যাটোর সদস্য হওয়ার প্রচেষ্টা চালাতে শুরু করে।

তবে এক্ষেত্রে রাশিয়া হুমকি দিয়ে রেখেছে, ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করার অর্থ হবে, রাশিয়ার সঙ্গে জোটটির সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া। ফলে সামরিক ও মানবিক সহায়তা দিলেও সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়ায় এখনই ইউক্রেনকে ন্যাটোতে আমন্ত্রণ জানাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না জোটের শীর্ষ দেশগুলো।