আয়া সোফিয়ায় ঘুরতে এসেছিলেন রুশ পর্যটক, অতঃপর

তুরস্কের প্রাচীন নগরী ইস্তাম্বুলে অবস্থিত ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া গ্র্যান্ড মসজিদ ঘুরতে এসেছিলেন রাশিয়ার এক পর্যটক। সেখানে চলতে থাকা পবিত্র বুখারির দরস শুনে সেখানেই ইসলাম গ্রহণ করেন তিনি। খবর তুর্কি প্রেস।

কালেমা পড়ে ইসলামে দীক্ষিত হচ্ছেন রুশ পর্যটক

খবরে বলা হয়, তুরস্ক ভ্রমণে এসে দেশটির অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা আয়া সোফিয়া গ্রান্ড মসজিদ পরিদর্শনে যান ওই রুশ নাগরিক। সেখানে তখন পবিত্র বুখারি শরিফের হাদিসের দরস চলছিল। ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে তিনি সেই দরস শুনতে বসে পড়েন। সেই দরস শুনেই তিনি ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।

শায়খ ইবরাহিম খলিল নামের এক ব্যক্তির কাছে তিনি কালেমা পড়ে মুসলমান হন। ইসলাম গ্রহণের পর ওই রুশ নাগরিক নিজের জন্য আহমাদ দানিজ নামটি নির্বাচন করেন।

আয়া সোফিয়া

তার ইসলাম গ্রহণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা হলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। সেখানে অনেকেই তাকে ইসলাম গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।

৫৩২ সালে সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ানের আদেশে শুরু হয়েছিল আয়া সোফিয়ার নির্মাণকাজ। ইস্তাম্বুল শহরের নাম তখন ছিল কনস্টান্টিনোপল। ৫৩৭ সালে শেষ হয় এর নির্মাণকাজ। তখন থেকে এটি ছিল অর্থডক্স চার্চের প্রধানের অবস্থান। প্রায় ৯০০ বছর ধরে এভাবেই চলে আসছিল আয়া সোফিয়া। ১৪৫৩ সালে সুলতান দ্বিতীয় মেহমেদের অটোমান সাম্রাজ্যের দখলে চলে যায় কনস্টান্টিনোপল। তিনি এর নতুন নাম দেন ইস্তাম্বুল। সে সময় আয়া সোফিয়াকে মসজিদে পরিণত করতে নির্দেশ দেন বিজয়ী সুলতান দ্বিতীয় মেহমেদ।

১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্য পরাজিত হয়। পরবর্তী সময়ে তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা এবং ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট কামাল আতাতুর্কের নির্দেশে আয়া সোফিয়াকে একটি জাদুঘরে পরিণত করা হয়। ১৯৩৫ সালে সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় আয়া সোফিয়া।

এর প্রায় ৮৫ বছর পর ২০২০ সালের ২৪ জুলাই দেশটির আদালত এক রায়ে জানান, আয়া সোফিয়াকে জাদুঘরে পরিণত করা ঠিক ছিল না। পরে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আয়া সোফিয়াকে মসজিদে পরিণত করার এক আদেশে সই করেন। ২০২০ সালের ১০ জুলাই আবারও আয়া সোফিয়ায় উচ্চারিত হয় আজানের সুর। হাজারো মুসল্লির অংশগ্রহণের অনুষ্ঠিত হয় জুমার নামাজ। সেই থেকে এটি মসজিদ হিসেবই গণ্য হয়ে আসছে। তবে এটি এখনও সব ধর্মের মানুষের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত। দেশটির অন্যতম প্রধান পর্যটনস্থলও এই আয়া সোফিয়া।