যেদিন একদিনেই ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন ডন ব্র্যাডম্যান
- Details
- by খেলাধুলা প্রতিবেদক
তখন পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে ট্রিপল সেঞ্চুরির রেকর্ডই ছিল মোটে একটি। তিন অংকের ম্যাজিক ফিগারে দ্বিতীয় নামটি সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচিত স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের। আর সেটিও কিনা একদিনে করেছিলেন! অবিশ্বাস্যই বটে। ১৯৩০ সালের এই দিনে (১১ জুলাই) টেস্ট ক্রিকেটে একদিনে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের একদিনে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান
১৯২৮-২৯ মৌসুমে ঘরের মাঠে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সিরিজ খেলেন ব্র্যাডম্যান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই সিরিজে ৪৬৮ রান করেছিলেন তিনি। ব্যাটিং গড় ছিল ৬৬.৯। সিরিজে দুটি শতক হাঁকিয়েছিলেন ব্র্যাডম্যান। এমন পারফরম্যান্সের পরও কিছু ক্রিকেট পন্ডিত বলেছিলেন যে ব্র্যাডম্যান তার কৌশলের কারেণ ইংল্যান্ডে রানের জন্য লড়াই করবেন।
ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার এবং সাংবাদিক পার্সি ফেন্ডার দাবি করেছিলেন, ব্র্যাডম্যান ইংল্যান্ডে রান পাবেন না। এছাড়া তাকে একজন ‘বেপরোয়া’ তরুণ ক্রিকেটার বলে অভিহিত করেছিলেন ফেন্ডার।
১৯২৯ সালে ২১ বছর বয়সে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড সফরে যান ব্র্যাডম্যান। যেটি ছিল তার দ্বিতীয় টেস্ট সিরিজ। সিরিজের প্রথম টেস্টেই ফেন্ডারকে ভুল প্রমাণ করেছিলেন ব্র্যাডম্যান। ট্রেন্ট ব্রিজে দুর্দান্ত ১৩১ রান করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ব্যাটার। যদিও ওই টেস্টে ৯৩ রানে হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া।
পরের টেস্টে লর্ডসে ফেন্ডারকে আবারও ভুল প্রমাণ করেন ২৫৪ রানের ইনিংস খেলে। তার ওই ইনিংসের সুবাদে সিরিজ সমতায় ফেরে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। বছর খানেক পর ওই ইনিংসটিকে ব্র্যাডম্যান তার ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় হেডিংলিতে। লর্ডস টেস্টের পর ১০ দিনের একটি লম্বা বিরতি ছিল। এই ১০ দিনে কোনো প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেনি অস্ট্রেলিয়া। সত্যিকার অর্থে কোনো ম্যাচ অনুশীলন ছিল না ব্র্যাডম্যানের। এরপর হেডিংলিমে প্রথম দিনের ১১ বলের মধ্যেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলতে অধিনায়ক বিল উডফুলের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ২১ বছর বয়সী ব্র্যাডম্যান। দুজনের মিলে গড়েন ১৯২ রানের জুটি। জুটিতে উডফুলের অবদান ছিল ৫০ রান।
প্রথম সেশন শেষে ১০৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন ব্র্যাডম্যান। সেই সময়ে টেস্টের প্রথম দিনে লাঞ্চ বিরতির আগে সেঞ্চুরি পূর্ণ করা তৃতীয় ক্রিকেটার হয়েছিলেন তিনি। তার আগে যেটা করেছিলেন দুই অস্ট্রেলিয়ান ভিক্টর ট্রাম্পার ও চার্লি ম্যাকার্টনি।
চা বিরতির আগে ব্যক্তিগত আরও ১১৫ রান যোগ করেন ব্র্যাডম্যান। এই সময় ইংল্যান্ডকে কয়েকটি সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি। ১৪১ এবং ২০২ রানে ব্যাট করার সময় দুটি সুযোগ দিয়েছিলেন। তার ২৭৩ রানের মাথায় সহজ আউটের সুযোগ নষ্ট করেছেন ইংল্যান্ডের জর্জ ডাকওয়ার্থ। ওই সুযোগের পর আরও ৩৬ রান যোগ করে দিনশেষে ৩০৯ রানে অপরাজিত ছিলেন ব্র্যাডম্যান।
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সেটি ছিল দ্বিতীয় ট্রিপল সেঞ্চুরির রেকর্ড। তার তিন মাস আগে ইংল্যান্ডের অ্যান্ডি স্যান্ডহাম করেছিলেন ৩২৫ রান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিল সেটি।
আধুনিক যুগে ক্রিকেট অনেক বদলে গেছে। চার ছক্কার ধুন্দুমার ক্রিকেটের আবির্ভাব হয়েছে। তারপরও ৯০ বছর আগের ব্র্যাডম্যানের সেই রেকর্ডটি এখনও অক্ষুন্ন রয়েছে। আশ্চর্যজনক ব্যাপার ছিল, সেদিন কোন ছক্কা ছিল না কিন্তু ব্র্যাডম্যানের ইনিংসে। বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন ৪২টি। যা তার মোট রানের ৫৪ শতাংশ। ব্র্যাডম্যান তার পুরো ক্যারিয়ারে মাত্র ছয়টি ছক্কা মেরেছিলেন।
এরপর ওভালে পঞ্চম টেস্টে ২৩২ রান করেছিলেন ব্র্যাডম্যান। সিরিজে ১২৯.১ গড়ে মোট ৯৭৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন ৯৯.৯৯ গড়ে ক্যারিয়ার শেষ করা এই ক্রিকেটার। একটি একক সিরিজের জন্য যা বিশ্বরেকর্ড।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.