ব্রিটেনের প্রাচীন লাইব্রেরিতে স্বর্ণখচিত কোরআন

প্রাচীন পাণ্ডুলিপির জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে অবস্থিত চ্যাথাম লাইব্রেরি। কাঠের স্থাপত্যে তৈরি এ লাইব্রেরি ৩৭০ বছর ধরে ইংরেজ ভাষাভাষীদের জন্য সবচেয়ে পুরোনো গ্রন্থসম্ভার হিসেবে পরিচিত। এতে রয়েছে এক লাখ ২০ হাজারের বেশি ঐতিহাসিক পাণ্ডুলিপি। রয়েছে ৪২০ বছরের পুরোনো ও স্বর্ণখচিত পবিত্র কোরআনের একটি কপি। খবর আনাদোলু।

চ্যাথাম লাইব্রেরির অন্দর ও স্বর্ণখচিত কোরআন

১৬৫৩ সালে ম্যানচেস্টারের তৎকালীন ব্রিটিশ বস্ত্র ব্যবসায়ী, ব্যাংকার ও জমিদার হামফ্রে চ্যাথামের ইচ্ছানুসারে তারই নামে বেলে পাথরের একটি ভবনে লাইব্রেরিটি গড়ে তোলা হয়। এর দুই বছর পর ১৬৫৫ সালের আগস্টে জনসাধারণের জন্য এ লাইব্রেরি খুলে দেওয়া হয়। এটি মূলত ১৪২১ সালে নির্মিত একটি ভবনে অবস্থিত, যা তৈরি করা হয়েছিল গির্জার পুরোহিতদের থাকার জন্য।

এ লাইব্রেরিতে ১৬৫৫ সাল থেকেই নতুন বই কেনা শুরু হয়। সেই সময়ের অনেক নোট, পাণ্ডুলিপি, চিঠিপত্র, বন্ড, প্রিন্ট ও চিত্রকর্ম রয়েছে লাইব্রেরিটিতে। এখানে রয়েছে ৪০টিরও বেশি মধ্যযুগের পাণ্ডুলিপি এবং এক লাখ ২০ হাজারের বেশি নানা ধরনের প্রকাশনা। লাইব্রেরিতে রাখা আছে ১৭ শতকের আগের তৈরি একটি কাঠের ম্যানুয়াল প্রেস, যা পাঠক-দর্শনার্থীদের মনোযোগ কাড়ে। এছাড়াও এখানে রয়েছে ঐতিহাসিক পোস্টকার্ড, টুপি, ব্রুশিয়ার, পোস্টার।

চ্যাথাম লাইব্রেরি

পুরোনো সেই পাণ্ডুলিপির সঙ্গে এ লাইব্রেরিতে রয়েছে পবিত্র কোরআনের স্বর্ণখচিত মাঝারি আকারের একটি অনুলিপি। লাইব্রেরির দর্শনার্থী সেবার প্রধান সমন্বয়ক সিয়ান লুইস ম্যাসন জানান, কোরআনের অনুলিপিটির ভেতরের সোনালি রং এখনো ঝকঝকে। এর পুরোটাই হাতে লেখা এবং এর সবকিছুই ভালো আছে।

এর প্রথম পৃষ্ঠায় ল্যাটিন অক্ষরে ‘১৭৪৭ সাল’ শব্দ দুটি লেখা রয়েছে। হয়ত তখন কেউ এটি সংগ্রহ করেছিল। সাধারণত দীর্ঘদিনের ব্যবধানে সোনার আবরণ কালো বা লাল হয়ে যায়। কিন্তু কোরআনের কপিটির ভেতরে থাকা সোনালি রং এখনো অক্ষত রয়েছে।

ম্যানচেস্টার শহরের চ্যাথাম লাইব্রেরিটি আরেকটি কারণে বিখ্যাত। এখানেই কমিউনিস্ট চিন্তাবিদ কার্ল মার্কস ও জার্মান সমাজতান্ত্রিক চিন্তাবিদ ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস পড়াশোনা করতেন, আলোচনায় মিলিত হতেন।