৮ বছরের জন্য নির্বাচনে নিষিদ্ধ হলেন বলসোনারো

ব্রাজিলের সুপ্রিম ইলেক্টোরাল কোর্ট দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে আট বছরের জন্য নির্বাচনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে সাব্যস্ত হওয়ার পর তার ব্যাপারে এ রায় দেন আদালত। খবর বিবিসি।

জইর বলসোনারো

৬৮ বছর বয়সী বলসোনারো বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়, ব্রাজিলের নির্বাচনে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ব্যালট হ্যাক করে কারচুপির সুযোগ আছে এমন মিথ্যা দাবির মাধ্যমে তিনি দেশটির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছেন।

বিচারপতি প্যানেলে ৫-২ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় এই রায় আসে। তবে এই রায়কে ‘পিঠে ছুরির মারার’ সঙ্গে তুলনা করে বলসোনারো বলেছেন, ব্রাজিলে ডানপন্থার রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন তিনি। বলসোনারোর আইনজীবীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা বলছেন, বলসোনারোর তৎকালীন বক্তব্য নির্বাচনী ফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি।

বলসোনারো সমর্থকদের হামলা

সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় অর্থাৎ গত বছরের ২ অক্টোবর থেকে বলসোনারোর ওপর এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। শেষ পর্যন্ত এ রায় বহাল থাকলে বলসোনারো ২০২৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং ২০২৪ ও ২০২৮ সালের স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। ২০৩০ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে তার ওপর কোনো বাধা থাকবে না।

গত বছরের ১৮ জুলাই ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় নিজের বাসভবনে বিদেশি কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানান বলসোনারো। সেই বৈঠকে তিনি দাবি করেন, ব্রাজিলের নির্বাচনে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন হ্যাক করা যায় এবং এতে বড় ধরনের কারচুপির সুযোগ আছে। তার এ বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

পরে অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের ভোটে সামান্য ব্যবধানে বামপন্থী নেতা লুলা দা সিলভার কাছে হেরে যান বলসোনারো। প্রথম ধাপের ভোটে কেউই ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় ভোট নেওয়া হয়েছিল। ভোটে হেরে গেলেও বলসোনারো শেষপর্যন্ত তা মেনে নেননি। বরং লুলার শপথ নেওয়ার দুই দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় চলে যান তিনি।

তার এই মনোভাবের প্রভাব পড়ে তার সমর্থকদের ওপর। তারাও নির্বাচনী ফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ বছরের ৮ জানুয়ারি তারা একযোগে ব্রাজিলের পার্লামেন্ট ভবন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্ট ভবনে তাণ্ডব চালায়।

এর আগে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দো কলার ডি মেলো এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভাকেও নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে এবারই প্রথম কোনো প্রেসিডেন্টকে ফৌজদারি অপরাধের পরিবর্তে নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।