তেল রপ্তানি বন্ধের হুমকি দিলো লিবিয়ার হাফতার প্রশাসন

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল ভিত্তিক সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চল থেকে তেল ও গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি, ত্রিপোলির সরকার (জাতিসংঘ স্বীকৃত) জ্বালানির রাজস্ব নষ্ট করছে। দেশটির পূর্বাঞ্চল দখল করে আলাদা সরকার কায়েম করেছেন খলিফা হাফতার। তিনি লিবিয়ার ন্যাশনাল আর্মির শীর্ষ কমান্ডার।

লিবিয়ার একটি তেলক্ষেত্র

হাফতার সরকারের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ওসামা হামাদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে হাফতার সরকার ২০২২ সালে ত্রিপলি ভিত্তিক সরকারের তেলের আয় থেকে ১৩০ বিলিয়ন দিনার বা প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলার রক্ষা করতে সক্ষম হয়। হাফতার সরকার তেল অবরোধসহ আরও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। লিবিয়ার তেল বিদেশে রপ্তানির আইনি বৈধতার ব্যাপারে আমরা আদালতের রায় চাইব।

খবরে বলা হচ্ছে, হাফতার সরকার ত্রিপোলি ভিত্তিক জাতীয় ঐক্য সরকারের কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দেয় না। হামাদ বলেন, আমরা বিদেশিদের কাছে তেল-গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করতে প্রস্তুত। আমরা ফোর্স ম্যাজেউরও (কোম্পানিগুলোকে সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে তেল রপ্তানির চুক্তিভিত্তিক বাধ্যবাধকতা) বন্ধ করতে চাই। তার অভিযোগ, ত্রিপোলি সরকার অতিরিক্ত ব্যয় করার মাধ্যমে রাজস্ব নষ্ট করছে। তিনি তেলের রাজস্বের সুষ্ঠু বণ্টন দাবি করেছেন।

লিবিয়ায় রয়েছে আফ্রিকা মহাদেশের বৃহত্তম তেলের মজুদ। কিন্তু ২০১১ সালে ন্যাটো-সমর্থিত বিদ্রোহে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক গাদ্দাফির পতনের পর থেকে দেশটিতে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে।

জাতিসংঘ স্বীকৃত লিবিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হামিদ দ্বেইবার ত্রিপোলিতে সরকার কায়েম করেছেন। তেল-গ্যাস রপ্তানি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হাফতারের সঙ্গে তার সরকারের দ্বন্দ্ব চলছে। হাফতার বাহিনী অতীতেও লিবিয়ার তেলক্ষেত্র অবরোধে নেতৃত্ব দিয়েছিল।

লিবিয়ায় দুটি শাসন কর্তৃপক্ষ বিদ্যমান। একটি ত্রিপোলি ভিত্তিক গভর্নমেন্ট অফ ন্যাশনাল ইউনিটি (জিএনইউ) এবং অপরটি পূর্বাঞ্চল ভিত্তিক গভর্নমেন্ট অফ ন্যাশনাল স্ট্যাবিলিটি (জিএনএস)। জিএনএস বাহিনী রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করার পরে ত্রিপোলিতে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকসহ শত শত লোক নিহত ও আহত হয়। ধ্বংস হয় বেসামরিক অবকাঠামো। বাস্তুচ্যুত হয় বহু মানুষ।