১১ বছর পর শিরোপা জিতল স্পেন

প্রায় এক যুগের ট্রফি খড়া কাটাতে উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালে মাঠে নেমেছিল স্পেন। অন্যদিকে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক ট্রফি জয়ের সন্ধানে নেমেছিল ক্রোয়েশিয়া। এ যাত্রায় সফল দল হিসেবে ২০১২ সালের পর নিজেদের ইতিহাসে তৃতীয় ট্রফির দেখা পেল স্পেন।

ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে ১১ বছর পর শিরোপা জিতল স্পেন

নেদারল্যান্ডসের ফেনুর্ড স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচটিতে ছিল চরম উত্তেজনা। আক্রমণ পাল্টা-আক্রমণে অসাধারণ ফুটবলের রোমাঞ্চ ছড়ায় দুই দল। নির্ধারিত সময়ে মীমাংস না হলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ১২০ মিনিট খেলার পরও গোলশূন্য থাকে দুই দল। শেষপর্যন্ত ট্রাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতে স্পেন।

এরমধ্য দিয়ে ইউরোপের দ্বিতীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপ, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ এবং নেশন্স লিগ জয়ের কীর্তি গড়ল স্পেন। এর আগে এই তিনটি শিরোপা জয়ের রেকর্ড ছিল কেবল ফ্রান্সের। ২০২১ সালের নেশন্স লিগের ফাইনালে এই স্পেনকে হারিয়েই রেকর্ডটি করেছিল দিদিয়ের দেশমের দল।

দুই দলের স্ট্রাইকাররা কিছু গোলের সুযোগ হাতছাড়া না করলে হয়ত প্রেক্ষাপট অন্যরকম হতে পারত। ফিনিশিংয়ে ভুল করেছে দুই দলই। আবার দুই দলের রক্ষণভাগের কৃতিত্বও চাইলে দেওয়া যায়।

৫৮ মিনিটের মাথায় স্পেন হাতছাড়া করে এই ম্যাচে তাদের সেরা সুযোগ। জর্ডি আলবার ক্রস থেকে মার্কো অ্যাসেনসিও গোল করতে ব্যর্থ হন। ৮৬ মিনিটে স্প্যানিশ রক্ষণদেয়াল ভাঙার খুব কাছে গিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। বদলি হিসেবে নামা মিকেল মেরিনোর কাটব্যাক থেকে সহজেই গোল পেতে পারতেন ইভান পেরিসিচ। কিন্তু আনসু ফাতি এ যাত্রায় বাঁচিয়ে দেন স্পেনকে। এর আগে দুই দলই বেশ কয়েকবার গোল করার সুযোগ পেয়েছে।

পেরেসিচ এদিনে লেফট উইংয়ে ফুটবলের দারুণ কিছু প্রদর্শনী দেখিয়েছেন। লেফট ব্যাক থেকে লুকা ইভানোয়েসিচ ও মাতেও কোভাচিচদের পাঁয়ে বল সরবরাহ করেছেন। তবে ফরওয়ার্ডের ব্যর্থতায় পেরেসিচের আক্রমণগুলা পূর্ণতা পায়নি।

নির্ধারিত সময়ের পর দুই দলই সাবধানী ফুটবল খেলেছে। ১২০ মিনিট পর স্নায়ু ধরে রাখার মিশনে নামে মডরিচ, দানিয়েল কারভাজাল, রদ্রি, মেরিনো, পেরিসিচরা। পেনাল্টিনামক লড়াইয়ে শেষপর্যন্ত স্নায়ু ধরে রেখে জয় পায় স্পেন। দুই দলের তিনটি করে শট জাল খুঁজে নেয়। চতুর্থ শট নিতে গিয়ে মিস করেন লাভলো মাজের। অন্যদিকে অ্যাসেনসিও এসে ৪-৩-এ এগিয়ে দেন স্পেনকে। পঞ্চম শটে পেরিসিচ স্কোরলাইন ৪-৪ করে ক্রোয়েশিয়াকে কিছুটা স্বস্তি উপহার দেন।

খেলা জমে উঠে স্পেনের পঞ্চম শট নেওয়ার পর। অ্যামেরিক লাপোর্তের মসি করেন শটটি। দুই দলের সমান পাঁচ শটের পর স্কোরলাইন সমান হয়। ষষ্ঠ শটটি নিতে এসেই ভুলটা করে বসেন ব্রুনো পেটকোভিচ। তার শটটি ঠেকিয়ে দেন স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমন। স্পেনের হয়ে ফাইনাল নির্ধারণী শটটি করেন রিয়াল মাদ্রিদ ডিফেন্ডার কানভাজাল। তার শটেই স্পেনের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যায়।