লক্ষ্য ২৫২, সিরিজে ফিরতে পারবেন মাশরাফিরা?

২০১৩ সালের নভেম্বরের ঘটনা। পরপর দুই ম্যাচ জিতে সিরিজই জিতে নিয়েছেন মাশরাফিরা। কিউইদের পরপর দুই সিরিজে ‘বাংলাওয়াশ’ করার দারুণ সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে। এর মধ্যেই ফতুল্লায় ৩০৭ রানের পাহাড় গড়ে ঘুরে দাঁড়ালো ব্রেন্ডন ম্যাককালামের দল। তারপরও বাংলাদেশ সেই রান পেরিয়ে গেলো সামসুর রহমানের দারুণ এক ইনিংসে ভর করে।

কিউইদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ চেজের গল্পটা ওই ম্যাচেই। সে তুলনায় নেলসনে আজ তামিম- ইমরুলদের লক্ষ্যটা ছোটই- ২৫২ রান। তামিম- ইমরুলরা কি পারবেন এই রান করে সিরিজে ফিরতে? যদি পারেন, তবে কিউইদের বিপক্ষে টানা তৃতীয় সিরিজ জয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে। না পারলে সিরিজ হেরে যেতে হবে এক ম্যাচ হাতে রেখেই।

এক ম্যাচ বাকি থাকতে বাংলাদেশের হারের চেয়ে আপাতত সিরিজে জয়ে ফেরার সম্ভাবনাটাই বেশি জোরালো। এখন ব্যাটসম্যানরা যদি তাদের কাজ করতে না পারেন, তাহলে ভিন্ন কথা।

এই ম্যাচে বাংলাদেশ দারুণ কিছু পেতে পারে, এমন সম্ভাবনা জেগে যায় মাশরাফির টস জেতার মাধ্যমেই। তখনও নেলসনের আকাশে হঠাৎ ঘন মেঘ। যে কোনো সময় নেমে আসতে পারে বৃষ্টি। এমন পরিস্থিতিতে যে কোনো অধিনায়ক মনে প্রাণে চাইবেন টস জিততে। টস জেতায় মাশরাফির খুব ‘সুনাম’ না থাকলেও আজ তিনি জিতলেন এবং নিলেন ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত।

প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে কিউইদের ব্যাটিং লাইনে প্রথম আঘাতটাও হানলেন মাশরাফি নিজেই। তার ফুলার লেন্থের বলে বোকা বনে এলবিডব্লিউ হলেন মার্টিন গাপটিল। আগের ম্যাচেও উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। গাপটিলের পরে আরো দুই উইকেট নিয়ে মাশরাফিই এই ম্যাচে বাংলাদেশের সফলতম বোলার (১০ ওভার ৪৯ রান, তিন উইকেট)। দুটি করে উইকেট নেন সাকিব ও তাসকিনও। একটি উইকেট নেন অভিষিক্ত শুভাশীস। তবে তানবির কোনো উইকেট পাননি। 

নিউজিল্যান্ড তাদের দ্বিতীয় উইকেটে ৩৭ রানের জুটি গড়েন কেন উইলিয়ামসন ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান টম ল্যাথাম। ব্যক্তিগত ১৪ রানে উইলিয়ামসন ফিরেন তাসকিনের বলে সাকিবে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে। ১০ রান পর ক্রমেই প্রথম ম্যাচের রূপে ফিরতে থাকা টম ল্যাথামকে ফেরান সাকিব। সুইপ করতে গিয়ে টাইমিংয়ের হেরফেরে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন ল্যাথাম। উইকেট ছাড়ার আগে তিনি আবশ রিভিউয়ের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু আম্পায়ার তাতে ল্যাথামের পক্ষে রায় দেয়ার মতো কিছু পাননি।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে গিয়ে ম্যাচের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি জুটি গড়েন জেমি নিশাম ও আগের ম্যাচ দিয়ে ছয় বছর পর ওয়ানডে ক্রিকেটে ফেরা নিল ব্রুম। জেমি ২৮ রান করে বিদায় নিলেও ব্রুম খেলে যেতে থাকেন সাবলিল সৌন্দর্য্যে। ক্যারিারের আগের সেরা ৭১ রান পেরিয়ে নতুন সেরা ইনিংস খেলেই মাঠ ছাড়েন তিনি (১০৪*)। করেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি।

ব্রুমের ব্যাটে ভর করে নিউজিল্যান্ড তোলে ২৫১ রান। সিরিজে টিকে থাকতে চাইলে ২৫২ গড়ে রান তুলে ম্যাচ জিততে হবে বাংলাদেশকে। এই নেলসনেই ৩১৮ রান চেজ করে জেতার রেকর্ড আছে তামিমদের। গত বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ৯৫ রান করেছিলেন তামিম। আজও তার দিকেই তাকিয়ে থাকবেন সমর্থকরা।

কিউইদের বিপক্ষে ফতুল্লায় ৩০৭ রান চেজ করা এবং নেলসনে ৩১৮ রান পেরিয়ে যাওয়ার স্মৃতি; এই দুই কীর্তির কোনটি থেকে তামিমরা আজ অনুপ্রেরণা নিবেন, সেটা এখন তাদের ব্যাপার!