বেলারুশে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনে চুক্তি

বেলারুশে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে দুই দেশ। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও বেলারুশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভিক্টর খ্রেনিন আজ মিনস্কে এ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। দুই দেশের সংবাদমাধ্যমের খবরে এ কথা জানা গেছে।

পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও বেলারুশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভিক্টর খ্রেনিন

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সের্গেই শোইগু বলেন, রাশিয়া বেলারুশের কাছে কোনো পারমাণবিক অস্ত্র হস্তান্তর করছে না। বেলারুশে রাখা অস্ত্রের ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং সেগুলো ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার রাশিয়ার কাছেই থাকছে।

তিনি বলেন, রাশিয়া ও বেলারুশ যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা বিদ্যমান আন্তর্জাতিক আইনগুলোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। বিরাজমান সামরিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বেলারুশের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে মিলে আমরা দুই দেশের অভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের কাজ সম্পন্ন করছি। রাশিয়া-বেলারুশের নতুন চুক্তি পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) লঙ্ঘন নয় বলে তিনি দাবি করেন।

শোইগু আরও বলেন, অভিন্ন প্রতিরক্ষার অংশ হিসেবে আমরা সৈন্যদের প্রশিক্ষণ ও লড়াইয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আলোকপাত করছি। মিনস্কের কাছে ইসকান্দার-এম মিসাইল হস্তান্তর করা হয়েছে। সুখোই-২৫ যুদ্ধবিমান বহরের একটি অংশ নতুন করে অস্ত্রায়িত করা হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, রাশিয়া ও সন্নিহিত অঞ্চলে ন্যাটোর সামরিক কর্মকাণ্ড আগ্রাসী রূপ নিয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে সশস্ত্র সংঘাত দীর্ঘায়িত করছে এবং এটা কিভাবে আরও উসকে দেওয়া যায় তার চেষ্টা চালাচ্ছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী বেলারুশ প্রজাতন্ত্রের ভূখণ্ডে বিশেষ সংরক্ষণাগারে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র রাখা হবে। কৌশলগত নয়, এমন পারমাণবিক অস্ত্র সেখানে মজুত থাকবে। যুথবদ্ধ দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ও সামরিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভবিষ্যতে অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসটিও প্রতিরক্ষামন্ত্রী সম্মেলন

পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনে বেলারুশের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের পাশাপাশি রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিনস্কে কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (সিএসটিও) প্রতিরক্ষামন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দেন।

সম্মেলনে সিএসটিও প্রতিরক্ষা কাউন্সিল জোটভুক্ত দেশগুলোর সমন্বিত নিরাপত্তা এবং বাহিনী ও সম্পদ ব্যবস্থাপনায় নতুন একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন ছয়-জাতি এ সামরিক ব্লকে আরও রয়েছে আর্মেনিয়া, বেলারুশ, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তান।

এর আগে গতরাতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো মস্কোতে বৈঠক করেন। ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ফোরামের প্লেনারি সেশনে অংশ নিতে লুকাশেঙ্কো গতকাল মস্কো যান। এতে আরও যোগ দেন কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ত-তোকায়েভ, কিরগিজস্তানের প্রেসিডেন্ট সাদির জাফরভ ও আর্মেনিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী মীর গ্রিগোরিয়ান।