আপনি পড়ছেন

বিজেপি ভাবধারা পরিহার করতে ও আইন প্রয়োগে সাম্প্রদায়িক বৈষম্য বন্ধ করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের কর্নাটকের নতুন রাজ্য সরকার। ক্ষমতাগ্রহণের পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি.কে. শিবকুমার। কর্নাটক বিধানসৌধে গতকাল এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

india karnataka policeপুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি.কে.শিবকুমার (ছবিতে বামে)

বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়া বলেন, এখন থেকে কোনো ধরণের নীতি-পুলিশিং চলবে না। আমরা এগুলো চলতে দেব না। নাগরিকরা নিজেদের রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী জীবনযাপন করবে, চলাফেরা করবে। পুলিশ কারো ব্যক্তিগত পছন্দে, কে কার সঙ্গে ঘুরল, কে কোন ধর্মের, এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

তিনি বলেন, আমাদের অগ্রাধিকার হলো জনবান্ধব পুলিশিং এবং আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা। সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে, কোনো ধর্মীয় গ্রুপকে উসকানি দিতে পারে, এমন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিষয়ে পুলিশকে দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

গতবছর বিজেপি সরকারের আমলে সামাজিক মাধ্যমে ভিত্তিহীন ও উসকানিমূলক পোস্টকে কেন্দ্র করে কর্নাটকে সাম্প্রদায়িক হামলায় বেশ কয়েকজন মুসলিম নাগরিকের প্রাণহানি ঘটে। মুসলিম-মালিকানাধীন বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হামলা, লুটপাটের শিকার হয়।

কর্নাটকে বিগত বিজেপি সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা ‘মুসলমানরা হিন্দুদের উচ্ছেদের জন্য জমি কিনে ল্যান্ড জিহাদ চালাচ্ছে’, ‘মুসলিম যুবকরা হিন্দু মেয়েদের সঙ্গে প্রেমের মাধ্যমে লাভ জিহাদ চালাচ্ছে, তাদেরকে ধর্মান্তরিত করছে’ বলে নিরন্তর প্রচারণা চালিয়েছেন। তাদের এসব বক্তব্যের প্রভাব পড়েছে রাজ্য পুলিশের কর্মকাণ্ডে। মুসলমানরা কর্নাটক পুলিশের বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার বলে অভিযোগ করেছেন মানবাধিকার সংগঠকরা।

মন্ত্রী-নেতাদের বক্তব্যে আশকারা পেয়েছিল বিজেপির তরুণ কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। হিন্দু সহপাঠীর সঙ্গে যোগাযোগ, হিন্দু সহকর্মীর সঙ্গে যাতায়াতের অভিযোগে হেনস্থার শিকার হন বহু মুসলিম ও খ্রিস্টান। পথে পথে মোটরসাইকেল, টেক্সি থামিয়ে যাত্রীদের ধর্মীয় পরিচয় যাচাইয়ের ঘটনায় খবরে এসেছে। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বি.এস.বোম্মাই নিজেও বিজেপি সমর্থকদের এমন নীতি-পুলিশিংকে সমর্থন জানিয়ে ২০২১ সালের অক্টোবরে ম্যাঙ্গালোরে বক্তৃতা করেছিলেন।

বিগত দিনে পুলিশের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের কথা উল্লেখ করে কর্নাটকের নতুন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষ পরিবর্তনের আশা নিয়ে নতুন সরকার নির্বাচিত করেছে। মানুষের ফরিয়াদ, অভিযোগের প্রতি পুলিশ কর্মকর্তাদের সাড়া দিতে হবে। কোনো ধরনের নীতি-পুলিশিং, কোনো গ্রুপের খবরদারিকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের ধর্ম, গোত্র বিবেচনায় রাখা যাবে না। কোনো বৈষম্য চলবে না।

পুলিশের সঙ্গে রাজ্য সরকারের প্রথম বৈঠকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি.কে.শিবকুমার ছাড়াও মন্ত্রিসভার সদস্য কে.জি.জর্জ, কে.এইচ. মুনিয়াপ্পা, বি.জেড. জহির আহমেদ খান, এম.বি.পাতিল, সতীশ জারাকিহোলি ও মুখ্যমন্ত্রীর এসিএস রজনীশ গোয়েল উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে ডি.কে. শিবকুমার বলেন, কংগ্রেস সরকার পুলিশের গেরুয়াকরণ হতে দেবে না। ২০২১ সালে বিজয়া দশমীর দিন কিছু পুলিশ কর্মকর্তার গেরুয়া কাপড় পরে ডিউটিতে আসার ঘটনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আপনাদের কর্মকর্তারা ম্যাঙ্গালোর, বিজাপুর ও বাগলকোটে গেরুয়া শাল পরে পুলিশ ডিপার্টমেন্টের জন্য লজ্জা বয়ে এনেছেন।

ঘুষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ ঘুষ নেবে না, ঘুষ দেবে না। আপনাদের কাছ থেকে আমাদের এক পয়সাও নিতে হবে না। কাউকে আপনারা কোনো ঘুষ, উপহার দেবেন না। শুধু নিজেদের কাজটুকু ঠিকমতো করুন, আর কিছু লাগবে না।

তিনি আরও বলেন, আপনারা আমিসহ কংগ্রেসের নেতাদের বিরুদ্ধে বহু মামলা দিয়েছেন। আমরা কারও ওপর কোনো ক্ষোভ রাখিনি। আমরা ক্ষোভ ও প্রতিহিংসা ধারণ করি না। আপনারা বদলে যান। যা হয়েছে, তা পেছনে রেখে দেন। নতুন করে কাজ শুরু করুন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.