দীর্ঘ এক সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অবস্থান করছে নিউজিল্যান্ডে। এবার নিয়ে চতুর্থবার দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে তাসমান পাড়ের দেশটিতে গিয়েছেন মাশরাফিরা। তবে আগের কোনোবারের সঙ্গে এবারের তুলনা চলে না। কারণ আগে বাংলাদেশ ছিলো খর্ব শক্তির এক দল। যারা মাঠে নামার আগেই কাঁপতো হারের শঙ্কায়। আর এখন যে কোনো দলের কাছেই বাংলাদেশ হলো হুমকির নাম। এবারের নিউজিল্যান্ড সফর তাই মনে জাগিয়ে তুলছে অন্য রকম রোমাঞ্চের আবহ।

bangladesh dreaming new things in new zealand tourদুই দেশ সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে। নেলসনে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি হেরেছে বাংলাদেশ।

২০০১ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সময়ে নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশ মোট পাঁচটি সিরিজ খেলেছে। তাতে ম্যাচ ছিলো ১২টি। এতোগুলো ম্যাচের সবই হারতে হয়েছে। কোনো কোনো ম্যাচে হারের ব্যবধান এতোই লজ্জাজনক ছিলো যে, সেগুলোর রেকর্ড দেখতেও এখন চরম অনীহা লাগে।

কিন্তু সেই দিনগুলো পিছনে ফেলে এসেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। এখন আর মাঠে নামার আর আগে হার দূরে থাক, জয় ছাড়া কিছুর চিন্তাই করেন না মাশরাফি- মুশফিকরা। নতুন রোমাঞ্চের স্বপ্নটা তাই দেখা যাচ্ছে বুকভরা সাহস নিয়ে। যে সাহসের ভিতটা মজবুত করে দিয়েছেন সাকিব-তামিম ও হালের সাব্বির- মোস্তাফিজরা।

কেমন ছিলো আগের সিরিজগুলো
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার এক বছর পর, ২০০১ সালে প্রথমবার নিউজিল্যান্ড সফরে যায় বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে ও পাকিস্তানের পর সেটা ছিলো বাংলাদেশ টেস্ট দলের মাত্র তৃতীয় বিদেশ সফর। হ্যামিল্টন ও ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত দুটি টেস্টেই বাংলাদেশ হারে ইনিংস ব্যবধানে। হ্যামিল্টনে হাবিবুল বাশার ও আল শাহরিয়ার রোকন দুটি হাফ সেঞ্চুরি পেলেও ওয়েলিংটনে এ রকম কোনো প্রাপ্তিও ছিলো না খালেদ মাসুদ পাইলটের দলের।

এরপর ২০০৭ সালের শেষের দিকে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে আবার নিউজিল্যান্ড যায় মোহাম্মদ আশরাফুলের দল। এবার এক টেস্টে নয় উইকেটে অন্যটিতে ইনিংস ও ১৩৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। তার আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও হয় হোয়াইটওয়াশ। ওয়ানডেতে ব্যাট হাতে জেমি হাউ ও ব্রেন্ডন ম্যাককালাম এবং বল হাতে কাইল মিলস ও ডেনিয়েল ভেট্টরি বাংলাদেশকে শেষ করে দেন। টেস্টে তামিম ওই সিরিজে সর্বোচ্চ রান করেন। কিন্তু অন্য ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে পারেননি। বল হাতে বাংলাদেশকে ডোবান ক্রিস মার্টিন।

২০১০ সালে তিন ওয়ানড এবং একটি করে টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট খেলতে গিয়েও সব ম্যাচ হেরে আসে বাংলাদেশ। একমাত্র টেস্টে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসান সেঞ্চুরি পান। কিন্তু মার্টিন গাপটিল (১৮৯) ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের (১৮৫) কাছে হারতেই হয় বাংলাদেশকে। ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচে এক সেঞ্চুরিতে ভর করে ১৪২ রান করেন ইমরুল কায়েস। যা ওই সিরিজের সর্বোচ্চ রান। কিন্তু অন্য কেউ তেমন সুবিধা করতে পারেননি। বল হাতে তিন ম্যাচে সাত উইকেট নিয়ে শীর্ষ উইকেট শিকারী হন শফিউল ইসলাম। মনে রাখার মতো আরো ব্যক্তিগত সাফল্য থাকলেও দলীয়ভাবে ওই সিরিজে চূড়ান্ত রকম ব্যর্থ হয়েই ফিরে বাংলাদেশ।

এবার সব অন্য রকম
আগের তিন সিরিজে বাংলাদেশ ছিলো আত্মবিশ্বাসহীন অনভিজ্ঞ এক দল। ব্যক্তিগত দারুণ কিছু ঝলকের দেখা মিললেও দলীয়ভাবে নিউজিল্যান্ডের সামনে দাঁড়ানোর মতো শৌর্য্য বাংলাদেশের তখনও ছিলো না। কিন্তু সব হিসেবে পাল্টে গেছে ২০১০ সালের অক্টোবরে। বাংলাদেশে খেলতে এসে ‘বাংলাওয়াশের’ স্বাদ পেয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় তারা (একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যাক্ত হয়)।

কিউইদের বিপক্ষে প্রবল দাপটে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর শুরুটাও হয়ে যায় তখনই। এরপর দেশের মাটিতে আরো এক ওয়ানডে সিরিজে কিউইদের হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ।

সর্বশেষ মুখোমুখি লড়াইয়ে (টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০১৬, কলকাতা) কিউইদের কাছে অবশ্য হেরেছেন মাশরাফিরা। সর্বশেষ ওয়ানডে লড়াইয়েও (বিশ্বকাপ ২০১৫, নেলসন) হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এবারের সিরিজ তাই পরপর দুই হারের বদলা নেয়ার। আগের তিন সিরিজের বাংলাদেশের সঙ্গে এবারের বাংলাদেশকে ভুলেও তুলনা করছে না কিউইরা। বরং দেশের মাটিতে একের পর এক সাফল্যে উদ্দীপ্ত মাশরাফিদের বিপক্ষে ভয়ে ভয়েই মাঠে নামবে নিউজিল্যান্ড। তা যতোই খেলাগুলো তাদের ঘরের মাটিতে হোক না কেনো।

এবার যে সব কিছু ভিন্ন। এবার মাশরাফিরা নিউজিল্যান্ডে গেছেন তাদের বিপক্ষে দুটি সিরিজ জেতার স্মৃতি নিয়ে। এবারের রোমাঞ্চটা যে অন্য রকম!

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.