সিরিয়ার আরব লীগে ফেরার পক্ষে-বিপক্ষে কারা

আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আজ রোববার মিশরের কায়রোতে জরুরি বৈঠকে বসছেন। সিরিয়াকে আরব লীগে ফেরানো হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এ বৈঠক। আজকের বৈঠকে এক দশকের বেশি সময় ধরে সিরিয়ার সদস্যপদের ওপর থাকা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হতে পারে বলে আশা করছেন অনেকে। তবে তিনটি দেশের স্পষ্ট আপত্তির কারণে সিরিয়াকে ফেরানোর সিদ্ধান্তটি সর্বসম্মত হবে না বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।

আরব লীগ সদর দপ্তরে সিরিয়ার প্রতিনিধির আসনটি এক দশকের বেশি সময় ধরে ফাঁকা রয়েছে

আরব লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জোটের ২২টি দেশের মধ্যে এখনও সিরিয়া প্রশ্নে প্রকাশ্য ও সর্বসম্মত সমর্থন দেখা যাচ্ছে না। তিনটি দেশ সিরিয়ার সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের স্পষ্ট বিরোধিতা করছে। এর বাইরে আধা ডজনের বেশি দেশ সিরিয়া প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান অপ্রকাশ্য রেখেছে।

যে তিনটি দেশ সিরিয়ার ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের বিরোধিতা করছে, তার মধ্যে সবার আগে রয়েছে কাতার। পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশটি সিরিয়ার রাজনৈতিক সংকটের মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত দামেস্কের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে রাজি নয় বলেও জানিয়েছে।

কুয়েতের কর্মকর্তারাও সিরিয়ার প্রত্যাবর্তনের প্রস্তাব নাকচ করেছেন। যদিও এর আগে কুয়েতি দৈনিক আল-জারিদার খবরে বলা হয়েছিল, সিরিয়াকে আরব লীগে তার আসন ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবে কুয়েত সমর্থন জানাবে।

সিরিয়াকে ফেরানোর প্রশ্নে মরক্কোরও আপত্তি রয়েছে। মরক্কোর বিচ্ছিন্নতাবাদী পলিসারিও ফ্রন্ট আন্দোলনের প্রতি দামেস্কের সমর্থন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত দেশটি আরব ফোরামে সিরিয়ার প্রত্যাবর্তনের বিরোধিতা করবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে সৌদি আরবসহ কয়েকটি প্রভাবশালী সদস্য দেশ সিরিয়ার সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে যোগাযোগ বৃদ্ধি করলেও দামেস্কের আরব লীগে ফেরা ও সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিষয়ে তারাও স্পষ্ট অবস্থান ব্যক্ত করেনি।

গত মাসে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌদি সফর করেছেন। পাল্টাপাল্টি সফরে সিরিয়া গেছেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একইভাবে মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর সিরিয়া সফর করেছেন। কিন্তু দুটি দেশের কোনোটিই আজকে কায়রোতে অনুষ্ঠেয় ভোটাভুটিতে কি অবস্থান নেবে, তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। লেবানন, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া, জিবুতি ও কমরোসের অবস্থানও স্পষ্ট নয়।

এখন পর্যন্ত আরব লীগের কেবল ১০টি দেশের সঙ্গে সিরিয়ার সম্পর্ক স্বাভাবিক রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- সংযুক্ত আরব আমিরাত, তিউনিসিয়া, ওমান, সুদান, বাহরাইন, মৌরিতানিয়া, আলজেরিয়া, ইরাক, জর্ডান ও ফিলিস্তিন। এ অবস্থায় শেষপর্যন্ত আরব লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন অন্যতম সদস্য দেশ সিরিয়া নিজের ঘরে ফিরছে কিনা সে সিদ্ধান্ত জানতে রাত অব্দি অপেক্ষা করতে হবে।