সুদানে দীর্ঘ লড়াইয়ের আশঙ্কা

সুদানের চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘাত দীর্ঘায়িত হবে, এমনটাই মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। বিবদমান দুই পক্ষের কারও মধ্যেই শান্তি খোঁজার কোনো আভাস দেখা যাচ্ছে না। খবর আল জাজিরা।

খার্তুমে লড়াই চলছে

গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেটের এক শুনানিতে দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক এভ্রিল হেইনস বলেন, সুদানের চলমান সংঘাতে বিবদমান দুই পক্ষ দেশটির সেনাবাহিনী এবং আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) বিশ্বাস করে, তারাই এ লড়াইয়ে জয়ী হবে। ফলে কোনো পক্ষই শর্তহীনভাবে আলোচনায় আসতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

হেইনস বলেন, উভয় পক্ষই এখন সমর্থনের বাহ্যিক উৎস খুঁজছে। এতে সফল হলে, সংঘাত তীব্রতর হতে পারে এবং পুরো অঞ্চলে অস্থিরতা দেখা দেবে। লড়াইটি এরমধ্যেই সুদানের ভয়ানক মানবিক পরিস্থিতিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এভ্রিল হেইনস

সুদানে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে গত ১৫ এপ্রিল সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। পবিত্র ঈদুল ফিতরে উপলক্ষ্যে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হলেও তা মানেনি কোনো পক্ষ। ফলে সেখানে তীব্র মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। অনেক দেশই তাদের নাগরিকদের সুদান থেকে সরিয়ে নিয়েছে। এরইমধ্যে সুদানের এক লাখের বেশি নাগরিক সীমান্ত অতিক্রম করে অন্যত্র পাড়ি জমিয়েছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) বলেছে, এ লড়াই অব্যাহত থাকলে মানবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। সংস্থাটি আশঙ্কা করছে, সংঘাতের জেরে দেশটি থেকে আট লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ অন্য দেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিতে পারে। সেক্ষেত্রে আগামী ছয় মাসে তাদের সহায়তায় ৪৪৫ মিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হবে।

এদিকে গতকাল রাজধানী খার্তুমে টানা ২০তম দিনের মতো লড়াই অব্যাহত ছিল। সেনাবাহিনী রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত জেনারেল কমান্ড সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও প্রেসিডেন্ট প্যালেসসহ আশপাশের অনেক এলাকা আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বুধবার থেকে সেনাবাহিনী এ সব এলাকায় নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ওমদুরমান ও বাহরির পার্শ্ববর্তী শহরগুলোতেও ভারী বোমাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে।

এমনিতেই উভয় পক্ষ আলোচনায় বসতে তেমন কোনো আগ্রহ দেখায়নি। তারপরও যদি আলোচনায় বসতে হয়, সে কারণে সম্ভাব্য আলোচনার আগে উভয় পক্ষই রাজধানীতে তাদের নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে চাইছে।

এদিকে সহায়তার ছয়টি ট্রাক লুট হওয়ার পর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার গ্যারান্টি চাওয়া হয়েছে লড়াইরত উভয় পক্ষের কাছে। জাতিসংঘের সাহায্য বিষয়ক প্রধান নির্বাহী মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, এ বিষয়ে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে উভয় পক্ষের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক করবেন তারা।