হাঙ্গেরিকে পোপ: অভিবাসীদের জন্য দরজা খুলে দিন

হাঙ্গেরি সরকারকে অভিবাসীদের প্রতি উদার ও উন্মুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। গতকাল রোববার বুদাপেস্ট স্কোয়ারে হাজার হাজার লোকের সমাবেশে তিনি এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রাজনৈতিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে অভিবাসীদের প্রতি আন্তরিক হতে হবে।

হাঙ্গেরিতে পোপ ফ্রান্সিস

মধ্য ইউরোপীয় দেশটিতে তিন দিনের সফর শেষ করেছেন পোপ। দেশটির জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান কট্টর অভিবাসন বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন।

হাঙ্গেরির সরকার অভিবাসন ঠেকাতে সীমান্ত বেড়া নির্মাণের পাশাপাশি একাধিক আইনি সংশোধনিও করেছে। ২০১৫ সাল থেকে হাঙ্গেরিতে আশ্রয়ের আবেদন গ্রহণ করা কমিয়ে দিয়েছে দেশটি। হাঙ্গেরি কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালে প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার অবৈধ প্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করেছিল।

ভৌগলিক অবস্থানের কারণে হাঙ্গেরি ইউরোপের অন্যান্য দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান ট্রানজিট দেশগুলোর মধ্যে একটি। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব উভয় অভিবাসন রুটই হাঙ্গেরিয়ান অঞ্চল অতিক্রম করে। বিশেষ করে পশ্চিম বলকান রুট (তুরস্ক, গ্রিস, ম্যাসেডোনিয়া, সার্বিয়া বা ক্রোয়েশিয়া হয়ে হাঙ্গেরি, তারপরে অন্যান্য ইইউ রাষ্ট্র) সবচেয়ে সক্রিয়। হাঙ্গেরি-সার্বিয়া এবং হাঙ্গেরি-ক্রোয়েশিয়া সীমানা বেড়া নির্মাণের আগে হাঙ্গেরি ছিল ইইউতে প্রবেশের অন্যতম প্রধান ট্রানজিট দেশ।

পোপ বলেন, আসুন আমরা একে অপরের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিই। ক্রমবর্ধমান অভিবাসী সংকট মোকাবেলায় উৎসাহিত করি। অভিবাসীদের দরিদ্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের পথ বন্ধ রাখা দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক।

ভিক্টর আরবানের সরকার হাঙ্গেরির ক্ষমতায় আসে ২০১০ সালে। এরপর থেকে আরবান হাঙ্গিরিকে খ্রিস্টান ইউরোপের ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ শুরু করেন। এজন্য অভিবাসন প্রত্যাশীদের সঙ্গে ন্যাক্কারজনক আচরণ করা হয়।

তবে অরবানের সরকার হাঙ্গেরির সীমান্তবর্তী ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসাদের স্বাগত জানালেও তারা হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করতে পারছে না। কারণ মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে গিয়ে হাঙ্গেরি সরকার ইউক্রেনীয়দের দেশে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, দানিউবের তীরে সংসদের পেছনে কসুথ লাজোস স্কোয়ারে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শনিবার পোপের বক্তব্য শোনার জন্য প্রায় ৫০ হাজার লোক জড়ো হয়েছিল।